ঢাকার সাভারে এক হোটেল ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় ১০ মাস পর আত্মগোপনে থাকা দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সাভার থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সোমবার মাঝরাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার মুখ্য বিচারিক আদালতে তাদের পাঠানো হয়েছে।
এই হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ আসামিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে বাহিনীটি।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন লক্ষ্মীপুর সদরের বিনোদধর্মীপুর গ্রামের আজাদ হোসেন জাবেদ ওরফে মুরগি জাবেদ ও সাভার থানার গেন্ডা এলাকার আব্দুর রহিম। তারা আন্তজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য।
নিহত রবিউল ইসলাম লস্করের বাড়ি ঢাকার মিরপুরে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা জেলা পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) সালেহ ইমরান নিউজবাংলাকে জানান, গত ৪ অক্টোবর নিরালা পরিবহনের একটি বাস নিয়ে কুয়াকাটা যাওয়ার কথা বলে তিন দিনের জন্য রিজার্ভ নেয় ডাকাত দল। পরে ওই বাসে করেই মানিকগঞ্জ ও রাজবাড়ীতে ডাকাতির কাজ শেষ করে তারা ফিরছিল।
পথে ৫ অক্টোবর রবিউল ইসলাম নবীনগর থেকে কর্মস্থল মিরপুরের উদ্দেশে ওই বাসে ওঠেন। এ সময় ডাকাতদের কবলে পড়েছেন বুঝতে পেরে রবিউল চিৎকার করলে তাকে হুইলরেঞ্জ দিয়ে আঘাত করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, ঘটনাস্থলেই রবিউল মারা যান। পরে রাত ১২টার দিকে তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানানো হয় যে রবিউল খুন হয়েছেন।
পরদিন সাভারের বলিয়ারপুরের যমুনা ন্যাচারাল পার্কের গেটের পাশ থেকে রবিউলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ৬ অক্টোবর রাতেই নিহতের স্ত্রী হাফিজা বেগম অজ্ঞাত আসামি করে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন। মামলাটির তদন্তভার পায় পিবিআই।
পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ১৩ অক্টোবর সাভার থেকে ডাকাত দলনেতা বসির মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যে সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই ও ডেমরা থেকে আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সবাই হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এসআই সালেহ বলেন, ‘তাদের তথ্যেই জাবেদ ও রহিম হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হই। তবে ১১ ডাকাত গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই তারা দুজন আত্মগোপনে ছিল।
‘জাবেদ তার পেশা পরিবর্তন করে মাদকের কারবার করায় তাকে শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। অপরদিকে রহিমের স্থায়ী কোনো ঠিকানা ছিল না। সবশেষ সোমবার গভীর রাতে সাভার থানা এলাকা থেকে জাবেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যে একই এলাকা থেকে রহিমকেও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই।’