কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে অবস্থিত ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবিরে শুরু হয়েছে করোনার গণটিকাদান।
৫৬টি কেন্দ্রে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে একযোগে শুরু হয় এ কর্মসূচি।
এ উপলক্ষে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থাপিত টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গা পরিবারগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে যে ফ্যামিলি কাউন্টিং নম্বর বা পরিবার পরিচিতি নম্বর দেয়া হয়েছে মূলত সেই নম্বরের মাধ্যমে তাদের দেয়া হবে টিকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার-বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আসছেন ৪৮ হাজার ৪১০ রোহিঙ্গা। প্রথম পর্যায়ে শুধু ৫৫ বছরের বেশি বয়সীদের এ টিকা দেয়া হবে।
প্রতিটি কেন্দ্রে নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা বুথে টিকা নেয়ার সুবিধা রয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার সামছুদৌজা নয়ন জানান, মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার এ তিন দিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টিকাদান চলবে।
এ কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেককে চীনের তৈরি সিনোফার্মের প্রথম ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হবে।
তিনি আরও জানান, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। ৫৬ কেন্দ্রের মধ্যে টেকনাফে ১০টি কেন্দ্রে টিকা দেয়া হবে ৭ হাজার ৯০০ রোহিঙ্গাকে। এ ছাড়া উখিয়ায় ৪৬টি কেন্দ্রে টিকা পাবেন ৪০ হাজার ৫১০ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ।
এদিকে করোনা মহামারিতে টিকা পাওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সন্তুষ্টি ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে রোহিঙ্গারা।
টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি (নেতা) অতিক উল্লাহ জানান, সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনা করে তাদের জন্য টিকা কর্মসূচি গ্রহণ করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
উখিয়ার বালুখালী ১০ নম্বর ক্যাম্পের রোহিঙ্গা যুবক আব্দুল আলিম জানান, বয়স কম হওয়ায় তিনি টিকা নিতে পারছেন না। তারপরও ৫৫ ঊর্ধ্ব রোহিঙ্গাদের টিকা দিতে উৎসাহিত করছেন তিনি।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) প্রণয় রুদ্র জানান, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের টিকা প্রদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। টিকা প্রদানকারী স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন মাহবুবুর রহমান জানান, প্রথম ডোজ তিন দিনে শেষ করা সম্ভব না হলে সময় বাড়ানো হতে পারে। আর এমনিতে গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ক্যাম্পের রাস্তাগুলো বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ জানান, জেলায় ২২৮টি গণটিকাদান কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে টিকা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হয়েছে।