দুই দিনের ব্যবধানে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে ভেসে এলো তিনটি মৃত ডলফিন।
কুয়াকাটা সৈকতের পশ্চিম পাশে কম্পিউটার পয়েন্টসংলগ্ন স্থানে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ডলফিন দুটি দেখতে পান ব্লু গার্ডের সদস্যরা। পরে কুয়াকাটা সৈকতে দায়িত্বে থাকা ব্লু গার্ডের সদস্যরা সেগুলোকে মাটিচাপা দেন।
ইকোফিশ-২ প্রকল্পের পটুয়াখালী জেলার সহকারী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি জানান, কুয়াকাটা সৈকতে (ব্লু গার্ড) টিম নিয়ে কাজ করছিলাম। হঠাৎ আমাদের এক গার্ডের চোখে পড়ে সৈকতে দুটি মৃত ডলফিন। এগুলোর মুখে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
তিনি আরও জানান, জোয়ারের পানিতে ডলফিন দুটি ভেসে আসে। ডলফিন দুটি ৫ থেকে ৬ ফুট লম্বা হবে। বছরের প্রায় সময় সৈকতে বিভিন্ন ধরনের মৃত ডলফিন উঠে আসে। এগুলোর বেশির ভাগ জালে আটকে বা ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মারা যেতে পারে।
মৎস্য অধিদপ্তর বরিশালের সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপপরিচালক মো. কামরুল ইসলাম জানান, বঙ্গোপসাগরে দুই প্রজাতির ডলফিন পাওয়া যায়। একটি হলো বটল নোজ (বোতলের মতো মুখ), আরেকটি হাম্পব্যাক ডলফিন (পিঠের দিকটা সামান্য ভাঁজ ও কুঁজো)।
কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে আসা মৃত ডলফিনগুলো হাম্পব্যাক ডলফিন। ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরের অগভীর অঞ্চলে এই প্রজাতির ডলফিনের বাস।
কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ঠিক কী কারণে ডলফিনগুলো মারা যাচ্ছে তা বলা যাচ্ছে না। এ ধরনের ডলফিনগুলো মাছ খেয়ে বেঁচে থাকে। তাই বেশির ভাগ সময় জেলেদের মাছ ধরার জালে আটকে পড়ে মারা যায়। আবার বয়সের কারণেও অনেক সময় এদের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর ওরা জোয়ারের পানিতে তীরে চলে আসে। এগুলো থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল বলে মাটি চাপা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এর আগে গত ৭ আগস্ট কুয়াকাটা সৈকতে আরও একটি মৃত ডলফিন ভেসে আসছিল। স্থানীয় জেলে মো. সোহাগ জানান, সেদিন বিকেলে সৈকতের খাজুরা এলাকায় খুটা জাল ব্যবহারকারীরা জালসহ নৌকা তীরে উঠানোর সময় মৃত ডলফিনটি একটি মরা গাছের নীচে আটকে পরে থাকতে দেখে।
সোহাগ বলেন, ডলফিনটির মুখে রক্ত দেখা গেছে। দেখে মনে হয়েছে আঘাত পাওয়া। এটি প্রায় সাত ফুট লম্বা হবে।
এই সৈকতে গত ৯ মে ভেসে এসেছিল আরও একটি মৃত ডলফিন।