বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাজতে বাজতে আর চলছে না ঢুলি

  •    
  • ৯ আগস্ট, ২০২১ ০৮:৪০

পঞ্চগড় জেলা শহরের নাট্যব্যক্তিত্ব সরকার হায়দার বলেন, ‘যুগের বির্বতনে এই শিল্পের মানুষগুলোর জীবনপ্রবাহ থমকে গেছে। অভাব-অনটনে পড়ে নিদারুণ কষ্টে দিন পার করছেন তারা। এই ঢাকশিল্প বিলীন হতে বসেছে। এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা দরকার।’

কোথাও কোনো উৎসব নেই, মেলা নেই, হই-হুল্লোড়ও নেই। বিয়ের কিংবা সামাজিক সব আয়োজনও ঘরোয়া, অনাড়ম্বর। এসব আয়োজন ঘিরে যাদের উপার্জন, করোনাকালের উৎসবহীনতায় তারা পড়েছেন মহাসংকটে।

এমন একটি দল পঞ্চগড়ের ঢোলবাদকরা। যেকোনো আয়োজনে মানুষকে মাতিয়ে রাখতে যাদের ডাক পড়ত, তারা এখন ধুঁকছেন অর্থাভাবে।

আগডুম, বাগডুম আর ঘোড়াডুমের সেই ঢুলিদের কদরও এখন কমেছে। আগের মতো পাড়ায় পাড়ায় আর বেজে ওঠে না ঢোল। তাই অনেকে এই পেশাও বদলেছেন।

যারা ঢোলকে এখনও জীবিকার মাধ্যম হিসেবে আঁকড়ে ধরে রেখেছিলেন, করোনার কারণে উৎসব-আয়োজন না থাকায় তারা এখন দিশেহারা।

তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের কালিয়ামনি গ্রামে বংশ পরম্পরায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৮টি পরিবার ঢোল বাজিয়ে উপার্জন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

সাড়ে আট শতক জমিতে টিনের চালা ও খড়ের ঘর তুলে বসবাস করেন তারা। প্রতিটি পরিবারের জন্য সেখানে আছে একটি করে ঘর।

ঢোলবাদক নরেন্দ্র নাথ বর্মণ বলেন, ‘বংশ পরম্পরায় এই শিল্পের সঙ্গে আমরা জড়িত। আগে আসর জমিয়ে অনেক ভালো উপার্জন হতো। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ভালোই ছিলাম। এখন বয়সের ভারে তেমন কাজ করতে পারি না। তা ছাড়া আগের মতো কদর নেই। আমরা খুব কষ্টে আছি।’

একই গ্রামের সুরেন্দ্র নাথ বলেন, ‘আমরা বড় অসহায় হয়ে পড়েছি। এই করোনায় সকল প্রকার অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় কাজের অভাবে অনাহারেই থাকছি বলা চলে।’

শান্তি রায় জানান, ঢোল বাজিয়ে ঘরে খাবার আনতেন তার স্বামী। দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকায় কাজ করতে পারেন না।

তিনি বলেন, ‘সরকার সবাইকে সাহায্য করছে, কই আমরা তো কিছুই পেলাম না? চলব কীভাবে? ভগবান ছাড়া আমাদের আর কেউ নেই।’

পঞ্চগড় জেলা শহরের নাট্যব্যক্তিত্ব সরকার হায়দার বলেন, ‘যুগের বির্বতনে এই শিল্পের মানুষগুলোর জীবনপ্রবাহ থমকে গেছে। অভাব-অনটনে পড়ে নিদারুণ কষ্টে দিন পার করছেন তারা। এই ঢাকশিল্প বিলীন হতে বসেছে। এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা দরকার।’

তেঁতুলিয়ার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, ঢুলিদের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। তাদের সহায়তার ব্যবস্থাও করা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর