নরসিংদীর রায়পুরায় এক নারীর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
চারজনকে আসামি করে রোববার বিকেলে মামলা করেছেন পারভিন আক্তার নামের ওই নারীর ছোট ভাই। এই মামলায় দুইজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
তারা হলেন রায়পুরার মরজাল এলাকার আলী হোসেন এবং তার ভাগ্নে মো. শাহরিয়ার। আলী হলেন পারভিনের সাবেক দেবর ও শাহরিয়ার হলেন আলীর ভাগনে।
পারভিনের শরীরের ৭৫ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
স্বজন ও পুলিশ জানায়, রায়পুরার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের সোবানপুর গ্রামের পারভিনের সঙ্গে মরজাল এলাকার প্রবাসী জাকির হোসেনের বিয়ে হয়। তাদের ১০ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
স্বামী প্রবাসের থাকার কারণে প্রায়ই শ্বশুরবাড়ির লোকজন পারভিন ও তার সন্তানের ওপর নির্যাতন করত।
বছরখানেক আগে পারভিনের দেবর আলী হোসেন তার সন্তানের পায়ে দা দিয়ে কোপ দেয়। এ ঘটনায় মামলা করেন গৃহবধূর বাবা। এর পর থেকেই মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
এতে রাজি না হওয়ায় নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে সোবানপুরে গিয়ে উঠতে বাধ্য হন পারভিন।
এর মধ্যেই পারভিনের সঙ্গে তার স্বামীর বিচ্ছেদ হয়। টিকা নিয়ে দেয়ার কথা শনিবার দুপুরে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয় সাবেক স্বামীর পক্ষের আত্মীয়রা। সন্ধ্যার পর চারজন তার মুখ বেঁধে লোচনপুর এলাকার একটি বাঁশঝাড়ের নিচে যায়।
সেখানে পারভিনের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। স্থানীয় লোকজন চিৎকার শুনে আগুন নেভানোর পর তাকে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাত ৩টার দিকে তাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় রোববার সকালে অভিযুক্ত আলী হোসেন ও শাহরিয়ারকে বাড়ি থেকে আটক করেছে পুলিশ।
রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক রেজাউল ইসলাম খান জানান, পারভিনের শরীরের প্রায় ৮০ ভাগ পুড়ে গেছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।