ইউনিয়ন পর্যায়ে শুরু হওয়া গণ টিকাদান কার্যক্রমের প্রথম দিনে ইচ্ছে করেই টিকা নেননি নাজমা খাতুন। পরে জানতে পারেন টিকা নিলে করোনায় মৃত্যুর ঝুঁকি কমে। টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও সংকট দেখা দিতে পারে জেনে দ্রুত ছুটে যান কাছের টিকাদান কেন্দ্রে। তবে টিকা আর তার ভোগ্যে জোটেনি।
এটি ছিল ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনরে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাতন গোদারাঘাট এলাকার শহীদ জিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের চিত্র। নাজমা ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা। নাজমার মতো অনেককেই টিকা না পেয়ে বাড়ি ফিরছেন হতাশ হয়ে।
টিকা না পেয়ে বাড়ি ফেরার সময় নাজমা বলেন, টিহা (টিকা) দিবার লাইগ্যা সহালে আইছিলাম। আইয়্যা দেখি মানুষ আর মানুষ। কয়েকঘণ্টা লাইনে দাড়াইয়া থাকার পরে হুনি টিহা (টিকা) নাই। এর লাইগ্য বাড়িত যাইতাছি।
একই অবস্থার কথা জানালেন জসিম উদ্দিন নামে আরেকজন। বলেন, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাড়িয়েও টিকা নিতে পারেননি তিনি।
টিকাকেন্দ্রে দাড়ানো ফারুক হোসেন জানান, কয়েকঘণ্টা অপেক্ষার পর তিনি টিকা নিতে পেরেছেন। ৯টা থেকে শুরু হলেও সকাল ৭টা থেকেই মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে কেন্দ্রে।
দুপুর দুইটার মধ্যেই ৬০০ মানুষকে টিকা দেয়া হয়ে যায়। অন্যদের আগামীকাল আসতে বলেন কর্তৃপক্ষ। কারণে দীর্ঘসময় দাড়িয়ে থেকেও খালি হাতেই ফিরতে হয় অনেককে।
সরেজমিনে সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের থানাঘাট কেন্দ্রে গিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েকজন ছাড়া প্রায় সবাই অন্য ওয়ার্ড থেকে এসেছেন টিকা নিতে। নিজেদের ওয়ার্ডে টিকা নিতে না পেরে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা গেছে।
চলমান টিকা কর্মসূচি নিয়ে ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম জানান, জেলার ১৪৬টি ইউনিয়ন, ১টি সিটি করপোরেশন ও ২টি পৌরসভার ৫৪৩ টি বুথে একযোগে গণটিকাদান কার্যক্রম চলছে। ওয়ার্ডে একদিনে ৬০০ জনকে টিকা দেয়া হচ্ছে।
টিকা না পেয়ে অনেকেই ফেরার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রথম দিন কেন্দ্রের সবাই টিকা পেয়েছে। দ্বিতীয় দিন মানুষের আগ্রহ বাড়ায় তাড়াতাড়ি টিকা দেয়া শেষ হয়। এ কারণে কেন্দ্রে উপস্থিত সবাইকে টিকা দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে তাদের অনেকে অন্য কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
৭ আগস্ট শুরু হওয়া গণ টিকাদান কর্মসূচি ১২ আগস্ট পর্য়ন্ত চলবে। এ সময়ের মধ্যে ৩২ লাখ মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়ার দেয়া হবে।