বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রূপগঞ্জ ট্র্যাজেডি: আগুনের জন্য দায়ী মালিকের অনিয়ম

  •    
  • ৮ আগস্ট, ২০২১ ২২:০৬

জেলা প্রশাসক জানান, ওই কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের সনদ ও বিল্ডিং কোড ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের এনওসি পাওয়া যায়নি। ছিল না ফায়ার সেফটিও। এগুলোসহ আরও কয়েকটি বিষয়ে মালিকের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া আগুনের পেছনে কারখানার মালিকের অনিয়ম দায়ী উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি।

কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামীম বেপারী ৫ আগস্ট রাতে ৪৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেন। এতে কারখানার মালিকের অনিয়মসহ সরকারি সংস্থার গাফলতির বিষয়টি উল্লেখের পাশাপাশি ২০টি সুপারিশ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ রোববার রাতে নিউজবাংলাকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

তিনি জানান, ওই কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের সনদ ও বিল্ডিং কোড ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের এনওসি পাওয়া যায়নি। ছিল না ফায়ার সেফটিও। এগুলোসহ আরও কয়েকটি বিষয়ে মালিকের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট যদি ঠিকঠাকভাবে মনিটরিং করত তাহলে সেখানে শিশুশ্রম থাকত না। বিল্ডিং কোডের অসঙ্গতি থাকত না। পর্যাপ্ত ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা থাকত। তাদের মনিটরিংয়ে কমতি আছে।

‘যেহেতু তারা অন্য মিনিস্ট্রিতে কাজ করে, তাই আমরা এই বিষয়গুলোতে আমাদের কনসার্ন মিনিস্ট্রিকে বলব। আমরা এগুলো কেবিনেট, লেবার মিনিস্ট্রি ও কনসার্ন মিনিস্ট্রিতে পাঠাব। তারা এগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। পাশাপাশি এ ঘটনায় করা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যদি আমাদের প্রতিবেদন ওই মামলায় যুক্ত করতে চান তাহলে তাকে প্রতিবেদনটি দেয়া হবে।’

তদন্ত প্রতিবেদনের ২০টি সুপারিশের মধ্যে বলা হয়েছে, সেখানে শিশুশ্রম ছিল। এ ধরনের কারখানায় যেন শিশুশ্রম যেন বন্ধ করা হয়। যারা মারা গেছে শ্রম আইন অনুযায়ী তাদের প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা ও আহতদের আড়াই লাখ টাকা করে মালিকপক্ষ থেকে দেয়া হয়।

এ ছাড়া বিল্ডিং কোড মানা, অগ্নিনিবার্পন যন্ত্র আরও বেশি রাখা ও প্রশিক্ষিত অগ্নিনিবার্পন দল কারখানায় রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।

ডিসি আরও জানান, নিচতলার সেন্ট্রাল রুমে শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

গত ৮ জুলাই রাতে হাশেম ফুড লিমিটেডের কারখানায় আগুন লাগে। শুরুতে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পরের দিন উদ্ধার করা হয় ৪৯ জনের মরদেহ। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২ জনে।

৮ তারিখ আগুন লাগলেও ৯ তারিখ রাতের আগে পুরোপুরি আগুন নেভানো যায়নি।

বেশির ভাগের মরদেহই পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্তের জন্য স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। এরপর ৪ আগস্ট ২৪টি মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ডিএনএ পরীক্ষার পর ২৪টি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়

আগুন নেভাতে দীর্ঘ সময় লাগার কারণ মনে করা হয় কারখানার প্রতি ফ্লোরে মজুত করা দাহ্য পদার্থ। ছিল বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক, যা আগুন আরও ছড়িয়ে যেতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।

মালিকপক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই এই আগুনের সূচনা। তবে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনার পেছনে কারখানা কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা ও অব্যবস্থাপনা দায়ী বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সংস্থা।

এ ঘটনায় পুলিশ কারখানার মালিক আবুল হাশেম, তার চার ছেলেসহ আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে। রিমান্ড শেষে হাশেম ও তার চার ছেলেকে জামিন দিয়েছে আদালত।

আগুনের ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিস, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন, শ্রম মন্ত্রণালয় এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর তদন্ত কমিটি করে। ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, ভবন নির্মাণের আগে ফায়ার সার্ভিস থেকে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিয়ে নকশার অনুমোদন নিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

এ বিভাগের আরো খবর