বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সেই বজ্রপাতে স্বামী হারাল দুই নববধূ

  •    
  • ৭ আগস্ট, ২০২১ ২২:২৭

মেজ মেয়ে তোহরাকে মাত্র ২০ দিন আগে বাবলুর সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন মা শিল্পী বেগম। বিয়ের দাওয়াতের গিয়ে বজ্রপাতে স্বামী হারিয়েছেন তোহরা। শুধু তোহরা না, সেদিন স্বামী হারিয়েছেন আরেক নববধূ টুকটুকি খাতুন। সুন্দরপুর ইউনিয়নের সেরাজুল ইসলামের ছেলে আসিকুল ইসলামের সঙ্গে চার মাস আগে বিয়ে হয়েছিল টুকটুকি খাতুনের। বজ্রপাত যেন টুকটুকির সংসারকেও ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত বুধবারের বজ্রপাতে ১৭ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দুই নববধূ তাদের স্বামী হারিয়েছেন। দুইজনই সেদিন তাদের স্বামীর সঙ্গে আরেক নবদম্পতিকে আনতে নৌকায় করে যাচ্ছিলেন। বজ্রপাতে তাদের স্বামী মারা গেলেও বেঁচে যান তারা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের মহারাজপুর ডাইলপাড়া গ্রামে তবজুল ইসলামের বাড়িতে এখনও শোকাবহ পরিবেশ।

তবজুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে কথা হয়, বজ্রপাতে নিহত তবজুল ইসলামের নাতি বাবলুর স্ত্রী তোহরা খাতুনের সঙ্গে। এসময় তোহরা খাতুনের মা শিল্পী বেগম সেখানে ছিলেন। বজ্রপাতে তিনি তার মেয়ে, স্বামী বাবলু ও মেয়ের শাশুড়ী ল্যাচল বেগমকে হারিয়েছেন।

শিল্পী বলেন, ‘তার স্বামী চট্টগ্রামে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে মারা যায়, স্বামীকে হারিয়ে চার মেয়েকে অনেক কষ্টে বড় করেছেন। তার মেজ মেয়ে তোহরাকে মাত্র ২০ দিন আগে বাবলুর সঙ্গে তিনি মেয়ে বিয়ে দিয়েছিলেন।’

মাত্র ২০ দিন আগে বাবলুর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তোহরার। বুধবার বিয়ের দাওয়াতের গিয়ে বজ্রপাতে স্বামী হারিয়েছেন তোহরা। ছবি: নিউজবাংলা

শুধু তোহরা না, বিয়ের দাওয়াতের গিয়ে স্বামী হারিয়েছেন আরেক নববধূ টুকটুকি খাতুন। সুন্দরপুর ইউনিয়নের সেরাজুল ইসলামের ছেলে আসিকুল ইসলামের সঙ্গে চার মাস আগে বিয়ে হয়েছিল নারায়ণপুর ইউনিয়নের জনতার হাট এলাকার মিজানুর রহমানের মেয়ে টুকটুকি খাতুনের। বজ্রপাত যেন টুকটুকির সংসারকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে।

স্বামীকে হারানো টুকটুকি এখন কথা বলার শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেন, ‘নৌকা থেকে নামার পর একটা টিনের ঘটে দাঁড়িয়ে ছিলাম, তারপর কি হয়্যাছে কিছু মনে পাইছে না। হ্যামি অজ্ঞান হয়্যা গেছিলাম। জ্ঞান যখন ফিরাছে তখন হাসপাতালেই ছিনু।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নরায়ণপুর ইউনিয়নের শরিফুল ইসলামের ছেলে মামুনের সাথে শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের হোসেন আলীর মেয়ে সুমির বিয়ে হয়েছিল গত ১ আগস্ট। পরের দিন কনে পক্ষ জামাই ও মেয়েকে (চাঁপাইনবাবগঞ্জের রীতি অনুযায়ী জামাই এর আটমোংলা) নিয়ে গিয়েছিল তাদের বাড়ি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের স্থানীয় রীতি অনুয়ায়ী, বুধবার সকালে ছেলে পক্ষ ছেলে ও ছেলের বউকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে আনার জন্য যাচ্ছিলেন কনের বাড়িতে।

সকাল ১০টার দিকে নৌকায় করে নারায়ণপুর থেকে বর পক্ষের ৫০ জন যাত্রা করে কনের বাড়িতে। পদ্মা নদীর পার হয়ে তারা পাকা ইউনিয়নের পৌঁছেই গিয়েছিল। নৌকা ঘাটে পৌঁছানোর সময়ই শুরু হয় বৃষ্টি। নৌকায় থাকা অনেকেই ভিজে যায়। সঙ্গে থাকা ছোটনা নৌকা থেকে নেমে বৃষ্টিতে ভিজেই দৌড় দিয়ে পৌচ্ছে যায় কনে পক্ষের বাড়িতে। তবে নারীসহ প্রায় ২০ জনের মতো আশ্রয় নেয় ঘাটে থাকা একটি টিনের ছাউনিতে। এসময় বজ্রপাত হলে, সেখানে থাকা ১৭ জনই মারা যান।

এ বিভাগের আরো খবর