বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জনবলসংকটে ধুঁকছে সামেক হাসপাতাল

  •    
  • ৭ আগস্ট, ২০২১ ১৬:৪৫

সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫৮ জন চিকিৎসক প্রয়োজন হলেও রয়েছেন মাত্র ৩১ জন। প্রায় অর্ধেক চিকিৎসক থাকায় বিপুলসংখ্যক রোগীকে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ (সামেক) হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড করা হয়েছে। তবে জনবলসংকটে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না আড়াই শয্যার এই হাসপাতালের রোগীরা।

স্বজনদের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে বিনা চিকিৎসায় মারা যাবেন অনেকে।

সামেক হাসপাতাল থেকে জানা যায়, জেলায় এখন করোনা রোগী আছেন ১ হাজার ১০৭ জন। তাদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে সামেক হাসপাতালে ভর্তি আছেন দুই শতাধিক রোগী।

এই হাসপাতালে ৫৮ জন চিকিৎসক প্রয়োজন হলেও রয়েছেন মাত্র ৩১ জন। প্রায় অর্ধেক চিকিৎসক থাকায় বিপুলসংখ্যক রোগীকে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীর ছেলে ইয়াসির হোসেন জানান, হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে দুপুরের পর কোনো চিকিৎসককে খুঁজে পাওয়া যায় না। ইন্টার্ন চিকিৎসক দিয়ে চলছে হাসপাতালটি।

হাসপাতালে ওষুধের সংকটও তীব্র। লুমানা, ডেক্সাসহ করোনা রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ সরবরাহ করা হয় সীমিত আকারে। এতে অনেক ক্ষেত্রে ওষুধই পাচ্ছেন না রোগীরা।

করোনা আক্রান্ত এক রোগীর মেয়ে আসমা খাতুন বলেন, ‘ওষুধ প্রায় সময় পাওয়া যায় না। আমরা গরিব মানুষ। বাইরে থেকে কিনতে পারি না। তাই অনেক সময় মাকে ওষুধ না খেয়ে থাকতে হয়।’

পরিচ্ছন্নতাকর্মীসংকটও রয়েছে হাসপাতালটিতে। ৫০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর প্রয়োজন হলেও আছেন মাত্র ২০ জন। এতে হাসপাতালটি যেন পরিণত হয়েছে বর্জ্যভাণ্ডারে। দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়েছে রোগী ও স্বজনদের।

আবুল হোসেন নামে একজন বলেন, ‘পুরো হাসপাতালই যেন ময়লার ভাগাড়। মেডিসিন ওয়ার্ডের সামনে যে ফাঁকা জায়গা রয়েছে, সেই জায়গাটা ময়লা-আবর্জনায় পূর্ণ। বাতাসে যে দুর্গন্ধ আসে, তাতে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়বে।’

ওয়ার্ডবয় ও আয়াসংকটও প্রবল। ৫০ জন ওয়ার্ডবয় ও আয়ার বিপরীতে আছেন মাত্র ১০ জন। ক্ষেত্রবিশেষে চিকিৎসকদেরও অক্সিজেন সিলিন্ডার টেনে নিতে হয়।

হাসপাতালে প্যাথলজি বিভাগ থাকলেও কোনো প্যাথলজিস্ট নেই। রোগীদের চিকিৎসায় অতীব গুরুত্বপূর্ণ রক্ত সঞ্চালন বিভাগও নেই।

করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় এই হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা নিয়েও শুরু হয়েছে টানাটানি। আটটি আইসিইউ শয্যার জন্য এখন অপেক্ষায় থাকেন ৪০-৫০ জন। সংকট মেটাতে আরও আটটি শয্যার চাহিদা জানিয়েছে সামেক কর্তৃপক্ষ।

জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আনিসুর রহিম জানান, করোনার সময়ে সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দিচ্ছে সামেক হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীরা। তবে জনবলসংকটে যথাযথ চিকিৎসা দিতে পারছেন না তারা। জেলার একমাত্র করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের এ অবস্থা মেনে নেয়া যায় না।

তিনি সাতক্ষীরার মানুষকে বাঁচাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘একবারে না হোক, ধীরে ধীরে জনবল ঘাটতি মেটানো হোক।’

সামেক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. কুদরত-ই-খুদা বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি আমরা। তবে জনবলসংকটে সেবাদান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত এ সংকট কেটে যাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর