বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আশ্রয়ণের হাজার ইউনিট ফাঁকা, মিলছে না ছিন্নমূল

  •    
  • ৭ আগস্ট, ২০২১ ১০:৪৪

আশ্রয়ণ প্রকল্পে পুনর্বাসিত পরিবারগুলো প্রথম দিকে ভালোই ছিল। তবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্মাণ করায় পরিবারগুলো শুরুতেই কর্মসংস্থানের অভাবের মুখে পড়ে। কিছুদিন থাকার পর অনেকেই ঘর ছাড়তে শুরু করেন। ঘর ফাঁকা হলেও পরে আর নতুন লোক পাওয়া যায়নি।

ঝিনাইদহের ছয় উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় আগে নির্মাণ করা ৯৩৫টি ইউনিট দীর্ঘ দিন ধরে ফাঁকা পড়ে আছে। সেখানে থাকার মানুষ মিলছে না। আবার বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে অনেক ইউনিট।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জানা যায়, ১৯৯৭-২০০২ সাল পর্যন্ত কয়েক দফায় ৩ হাজার ২০টি ইউনিট তৈরি করা হয়। এর মধ্যে এখন ফাঁকা পড়ে আছে ৯৩৫টি ইউনিট।

১৯৯৭ সালে ঝিনাইদহে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রথম ঘর তৈরি করা হয় শৈলকুপা উপজেলার দুধসর গ্রামে। ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের পাশের গ্রামটিতে ২০টি ব্যারাক নির্মাণ করা হয়।

এ ছাড়া উপজেলার কীর্তিনগর গ্রামে আটটি, কাকুরিয়াডাঙ্গা গ্রামে ১২টি ও মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর গ্রামে চারটি ব্যারাক নির্মাণ করা হয়। চারটি প্রকল্পের ৪৪টি ব্যারাকে ৩৩৩ ভূমিহীন ছিন্নমূল পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়।

তখন আশ্রয়ন প্রকল্পে থাকতে চাওয়া পরিবারের অভাব ছিল না। ভূমিহীন ছিন্নমূল পরিবারকে খুঁজে এনে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল।

আশ্রয়ণ ফেজ-২-এর অধীনে পরে ১৯টি প্রকল্প ও আশ্রয়ণ-২-এর অধীনে ৪১টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। জেলার ছয় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরকারি জমিতে নির্মিত এসব প্রকল্পে ৩০২টি ব্যারাক নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি ব্যারাকে ১০টি পরিবারের থাকার ব্যবস্থা ছিল।

এসব ইউনিটে দুটি করে শোবার ঘর, রান্নাঘর ও বারান্দা রয়েছে। টিনের ঘরগুলোর বেড়াও টিনের, তবে ভিত পাকা।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে পুনর্বাসিত পরিবারগুলো প্রথম দিকে ভালোই ছিল। তবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্মাণ করায় পরিবারগুলো শুরুতেই কর্মসংস্থানের অভাবের মুখে পড়ে। কিছুদিন থাকার পর অনেকে ঘর ছাড়তে শুরু করেন। ঘর ফাঁকা হলেও পরে আর নতুন লোক পাওয়া যায়নি।

তবে ভিন্ন চিত্র দেখা যায় ঝিনাইদহ শহরের পাশে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্প ঝিনুকমালা-১ ও ঝিনুকমালা-২-এ। সেখানে কোনো ইউনিটই খালি নেই।

শৈলকুপার দুধসর গ্রামের ব্যারাকে গিয়ে দেখা যায়, মানুষ না থাকায় ঘরগুলো বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে। বসবাসকারীরা বৃষ্টি পানি থেকে বাঁচতে চালায় পলিথিন দিয়ে রেখেছেন। ঘরের টিনের বেড়াগুলোও ভেঙে গেছে। ভিতও নড়বড়ে হয়ে গেছে।

একই চিত্র শৈলকুপার র্কীতিনগর ও ঝাউদিয়া আবাসন প্রকল্পের ঘরগুলোতে। সেখানে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ায় অনেকে ঘর ছেড়ে চলে গেছে। যারা আছেন, দুর্ভোগ আর ভোগান্তি উপেক্ষা করে বসবাস করছেন।

ঝাউদিয়া আশ্রায়নের বাসিন্দা লাল্টু মন্ডল বলেন, ‘এই যে বৃষ্টির সময় এসেছে। টিন দিয়ে পানি পড়ে ঘরে থাকা যায় না। বাথরুমগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। পোতার সিমেন্ট, ঢালায় সব উঠে গেছে। থাকায় কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

আব্দুল কুদ্দুস নামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা দিনমজুর খেটে-খাওয়া মানুষ। জমি-বাড়ি নেই বলে একানে আছি। একানকার যা অবস্থা তাতে থাকা যায় না।’

ঝিনাইদহে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজা বলেন, পুরাতন আশ্রায়নের অনেক ঘর বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এগুলো মেরামতের জন্য প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত তা পাশ হয়ে যাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর