বরিশালের আগৈলঝাড়ায় শিশু শিক্ষার্থী নুশরাত জাহান নোহার আত্মহত্যার ঘটনায় মামলায় দারুল ফালাহ প্রি-ক্যাডেট একাডেমির শিক্ষক শফিকুল ইসলাম সুমন পাইকের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আগৈলঝাড়া থানার এসআই মনিরুজ্জামান।
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে শিক্ষকের বেত্রাঘাত ও প্ররোচনায় আত্মহত্যা করে দারুল ফালাহ প্রি-ক্যাডেট একাডেমির তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নুশরাত।
অভিযোগপত্রে শিক্ষক শফিকুলকে একমাত্র আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ছরোয়ার জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান প্রায় এক বছর তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দেন।
চার্জশিটে নোহার স্কুলের শ্রেণি শিক্ষক উজিরপুর উপজেলার সাতলা গ্রামের শফিকুল ইসলাম সুমন পাইককে নোহার আত্মহত্যায় প্ররোচনায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
২০২০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর নোহা নিজ বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। সে ওই উপজেলার খাজুরিয়া গ্রামের সুমন মিয়ার মেয়ে এবং দারুল ফালাহ প্রি-ক্যাডেট একাডেমির তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। এ ঘটনায় শিক্ষক সুমন পাইককে অভিযুক্ত করে মামলা করেন তার বাবা।
পুলিশ জানায়, ২০২০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর করোনার মধ্যে সরকারের আইন অমান্য করে নোহার স্কুলের মাসিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। শ্রেণি কক্ষে পরীক্ষার ফল ঘোষণা হয় ৯ সেপ্টেম্বর। ওই পরীক্ষার ফলে নোহা ৩০ নম্বর পেয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় শিক্ষক শফিকুল নোহাসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ক্লাশ রুমে গালিগালাজ করে এলোপাতাড়ি বেত্রাঘাতে আহত করেন।
শিক্ষকের মারধর ও গালমন্দ সইতে না পেরে নোহা স্কুল থেকে বাড়ি গিয়ে ঘরের দোতলায় আড়ায় নিজের ওড়নার সঙ্গে গামছা জোড়া লাগিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। নোহাকে তার বাবা উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক পয়সা আদর্শ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে নোহার বাবা সুমন মিয়া স্কুল শিক্ষক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১০ সেপ্টেম্বর আগৈলঝাড়া থানায় মামলা করেন। মামলা পরেই আত্মগোপনে চলে যান অভিযুক্ত শিক্ষক শফিকুল।
নোহার স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন ১২ সেপ্টেম্বর পরিচালনা কমিটির এক জরুরি সভায় শফিকুলকে চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
একই বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর শিশু নোহাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগ এনে তার মা তানিয়া বেগম আদালতে একটি মামলা করেছিলেন। যেখানে নোহার বাবা ও বাদীর সাবেক স্বামী সুমন মিয়া, নোহার সৎ মা ঝুমুর জামান এবং সুমনের বোন লিপি বেগমকে আসামি করা হয়েছিল।