বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিঙ্গারের গুদামে আগুনের সূত্রপাত নিয়ে ধোঁয়াশা

  •    
  • ৫ আগস্ট, ২০২১ ২০:৪৬

ফায়ার সার্ভিসের ভাষ্য, পুড়ে যাওয়া ট্রান্সফরমার থেকে ড্রপ তারের মাধ্যমে আগুন গুদামে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি বলছে, সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি থাকলেও আগুন লাগার কারণ অন্য কিছু। আর ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গেই গুদামের ভেতর থেকে ধোয়া বের হতে শুরু করে বলে জানিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

ঢাকার সাভারে সিঙ্গারের কারখানার গুদামে অগুনে পুড়ে গেছে বিপুল পরিমাণ ইলেকট্রনিক পণ্য। প্রাথমিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।

অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কথা বলছে ফায়ার সার্ভিস ও পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি। ফায়ার সার্ভিসের ভাষ্য, পুড়ে যাওয়া ট্রান্সফরমার থেকে ড্রপ তারের মাধ্যমে আগুন গুদামে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি বলছে, সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি থাকলেও আগুন লাগার কারণ অন্য কিছু।

কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গেই গুদামের ভেতর থেকে ধোয়া বের হতে শুরু করে।

ঢাকার সাভারে ইলেক্ট্রনিক পণ্যের প্রতিষ্ঠান সিঙ্গার বাংলাদেশের গুদামে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে আগুন লাগে।

ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম নিউজবাংলাকে জানান, প্রথমে দুইটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যায়। পরে নিয়ন্ত্রণে কাজে যোগ দেয় আশপাশের আরও বেশ কয়েকটি ইউনিট।

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা জানান, গুদামে সিঙ্গারের ফ্রিজ, এসি ও টিভিসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য ছিল।চার ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ও কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা পুড়ে যাওয়া গুদাম পরিদর্শন করে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রেস্তোরা মালিক জীবন সরকার বলেন, ‘আমরা ভোর ৪টার দিকে দোকান খুলছি। সকাল সাড়ে ৭টার পর খাম্বা থেকে দুইটা ফায়ার হয়। একটা ফায়ার খুব জোরে হয়। তহন আমরা এই দিকে আয়্যা পড়ি। তখন একটা তার ঝুইলা থাকে।

‘ওই তারটা বাড়ি খায়্যা আবার ফায়ার হয়। তখন এই জায়গাটা থাইকা একটা তার ছিড়া যায়। ছিড়া তার থেকে গুদামের পিছনে মিটারে আগুনডা ধইরা যায়। পরে পুরা গোডাউনে আগুন ধইরা যায়।’নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ’সকালে গুদামের সামনে প্রথম টান্সমিটারে বিস্ফোরণ হইছে। তখন একটা তার ছিড়া নিচে পড়ে। পরে দেখি গুদামে আগুনের সূত্রপাত হইছে। আমরা ফায়ার সার্ভিসে খবর দিছি।’

সিঙ্গারের ওয়্যারহাউজ ম্যানেজার মৃণাল কান্তি জানান, ‘হঠাৎ করে আমরা খবর পাই ভেতর থেকে ধোঁয়া আসতেছে। তখন সাথে সাথে চলে আসছি। সিকিউরিটি গার্ড ছিলেন একজন, উনি আমাদের ফোন করছে।

‘আমাদের স্থানীয় লোকজন জানান, বাইরে যে ট্রান্সমিটার ছিল, ওইটা ব্লাস্ট হইছিল। কিন্তু ওনারা বুঝতে পারে নাই যে ভেতরে আগুন লাগছে। পরে যখন ধোঁয়া উঠছে তখনি আমাদের ইনফর্ম করে। তবে মানুষের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয় নাই।

‘ভিতরে ম্যাক্সিমাম নতুন ফ্রিজ আর কিছু জিনিসপত্র ছিল। সবকিছু পুড়ে গেছে। আগুন নেভাতে ৩-৪ ঘণ্টা লাগছে।’

ফায়ার সার্ভিসের ৪ নম্বর জোন কমান্ডার আব্দুল আলীম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের প্রথম যে ম্যাসেজ দিয়েছেন, তিনি জানান, এখানে একটা ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ ঘটছে। পরে ট্রান্সফরমারে আগুন লেগে গেছে। এই আগুন থেকে গুদামে আগুন লেগে গেছে।’

এভাবে আগুন লাগতে পারে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ট্রান্সফরমার থেকে ড্রপ তার সরাসরি গুদামের ভেতরে গেছে। ওই সাইডে গিয়ে আগুন লেগে গেছে। এভাবে আগুন লাগা সম্ভব। অবশ্যই এটা একটা বড় কারণ।

‘আমরাও ধারণা করছি ওইটাই হয়েছে। পোড়া তার ওখানে ছিল। উপস্থিত লোকজনও এটাই বলছে। বিদ্যুতের লোকজন পরে ট্রান্সফরমারটা খুলে নিয়ে গেছেন।’

ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে তিনি বলেন, ‘লকডাউনের কারণে মাল বিক্রি করা যায় নাই। সেই মালগুলো এখানে জমা ছিল। ফ্রিজ, এসি, টিভি, রাইস কুকার, সেলাইমেশিনসহ আরও জিনিস ছিল। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।’

আগুন নেভাতে সময় লাগলো কেন এ বিষয়ে বলেন, ‘ওনারা যেটা বলেছেন গুদামটা ১৭ হাজার স্কয়ার ফুট। টিনশেডের গুদামের ভেতরে কোন পাটিশন বা ওয়াল ছিল না। ওয়াল থাকলে আগুনটা স্প্রেড হতে পারতো না। যে কারণে আগুনের তীব্রতা বেশি ছিল।’

এই কর্মকর্তা বলেন, ‘শুক্রবার নাগাদ এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি হতে পারে। তবে এটা অধিদপ্তরের বিষয়।’

ঢাকা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ হারুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের লাইনের কোন সমস্যা হয় নাই। লাইন থেকে ওই খানে আগুন লাগবে কীভাবে? তার ছিঁড়ছে আমার সাব-স্টেশনের কাছে, সেখানেতো আগুন লাগে নাই। সেটা কোন ফেইস তার না। উপরে থাকে নিউট্রল তার। বজ্রপাতের প্রটেকশনের জন্য যেটা থাকে।

‘তার পোড়ার সঙ্গে সঙ্গে ১৪২ সেকেন্ডের একভাগ সময় লাগবে বন্ধ হতে। এটা অটো বন্ধ হয়ে যাবে। না হলেতো আমার ট্রান্সফরমার, সাবস্টেশন সবকিছু পুড়ে যাবে। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে প্রথমে মানুষ বিদ্যুৎ হ্যানত্যান এসব বলে। অন্য কারণে গুদামে আগুন লাগতে পারে। অনেক কিছুইতো হতে পারে। ভেতরে কী হয়েছে আমরাও বুঝতে পারতেছি না।’

এ বিভাগের আরো খবর