গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি তৈরি পোশাক কারখানার কয়েক শ বিক্ষুব্ধ শ্রমিকের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে টঙ্গীর ভাদাম এলাকায় ক্রসলাইন নিট ফেব্রিক্স লিমিটেড কারখানার সামনে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। পুলিশ তাদের থামাতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৫৮টি ফাঁকা গুলি, ২১ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ও তিনটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
এ ঘটনায় আহতদের টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন শিল্প পুলিশের (টঙ্গী জোন) সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) এমদাদুল হক, কনস্টেবল মেহেদী, সাব্বির, আশরাফুল ও মারুফ তমাল।
আহত আনসার সদস্যরা হলেন মোয়াজ্জেম হোসেন, রেজাউল করিম, মোহাম্মদ আলী মোল্লা।
তবে আহত শ্রমিকদের পরিচয় জানা যায়নি।
ক্রসলাইন নিট ফেব্রিক্স লিমিটেডের কয়েকজন শ্রমিক জানান, কারখানার ১৬ জন শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার থেকে কয়েক শ শ্রমিক বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করছিলেন।
বিষয়টি সমাধানের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ বুধবার সময় ঠিক করে দেয়। কিন্তু বুধবার সকালে কাজে এলে বিষয়টি সমাধান না করায় দুপুরের পর আবার শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে।
পরে সন্ধ্যায় মালিকপক্ষ বৃহস্পতিবার সমাধান করবে বলে জানায়। বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখেন। এ সময় তারা কারখানার ২ নম্বর গেটের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন।
শিল্প পুলিশের পরিদর্শক (টঙ্গী জোন) আব্দুল জলিল জানান, আইন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধের নোটিশ দেয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কারখানার নিরাপত্তায় শিল্প পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
তবে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জোর করে কারখানার গেট ভাঙচুর করে ভেতরে প্রবেশ করতে চান। এ সময় শ্রমিকদের বাধা দিলে পুলিশের ওপর তারা হামলা চালান। এ ঘটনায় পাঁচজন পুলিশ ও তিনজন আনসার সদস্য আহত হন। তাদের চিকিৎসা চলছে।
কারখানার শ্রমিক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের পর হঠাৎ কারখানা কর্তৃপক্ষ কয়েকজন শ্রমিককে ছাঁটাই করে। কিন্তু আমরা এই ছাঁটাই মানি না। বৃহস্পতিবার কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে আমরা শ্রমিকরা বিক্ষোভ করলে পুলিশ অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে বহু শ্রমিক আহত হয়েছে।’
কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রমিকরা গতকাল (বুধবার) বিক্ষোভের সময় কারখানার বেশ কয়েকজন স্টাফকে মারধর করে। এ পরিস্থিতিতে কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’
পরিদর্শক আব্দুল জলিল জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারখানার সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।