টানা বৃষ্টিতে তলিয়েছে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর। প্লাবিত হয়েছে বন্দরের পাশের জনবসতি। বন্দরের পার্কিং ইয়ার্ড, তার পশ্চিম পাশের চলাচলের রাস্তায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। বন্দরের প্রধান সড়ক ডুবে থাকায় পণ্যবাহী ট্রাক ও লোকজনের চলাচলেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ভোমরা গ্রামের হাসান আলী লাল্টু জানান, তার বসতবাড়িতে নোংরা ও দূষিত পানি ঢুকছে। এর মধ্যে হাঁটাচলা করায় তার পরিবারের লোকজনের পায়ে ঘা-পাঁচড়া দেখা দিয়েছে।
একই এলাকার জিয়াউল ইসলাম জানান, অবৈধভাবে সরকারি জায়গায় বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে ওঠায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো ড্রেনেজব্যবস্থাও নেই।
এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বন্দরের নোংরা ও দূষিত পানি ঢুকে পড়েছে ভোমরা পুরোনো হাটখোলার ঠাকুর পুকুরে। সেই পানি উপচে রাস্তা পেরিয়ে ঢুকছে আশপাশের বাড়িঘরে।
পানির তোড়ে ইট-বালু সড়ে গিয়ে রাস্তার মাঝে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু গর্ত। পুরোনো হাটখোলা বাজারের দক্ষিণ-পূর্ব তিন রাস্তার মোড় থেকে ভোমরা বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত রাস্তার এ অবস্থা।
ভোমরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনারুল গাজী বলেন, ‘পানি নিষ্কাশনের জন্য কর্তৃপক্ষের কোনো পরিকল্পনা নেই। ভোমরার পানি বের হয় ইছামতী নদীতে। সেই নদীতে পানি যাওয়ার সব পথ বন্ধ। স্থানীয় উদ্যোগে পানি নিষ্কাশনের কিছু ব্যবস্থা নেয়া হলেও অগ্রগতি সামান্য।’
ওই এলাকার একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘বন্দরে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় নোংরা ও দূষিত পানি ঢুকে পড়ছে আমার কার্যালয়ে। সেখানে কম্পিউটার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি, কাগজপত্র নষ্ট হচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই ভয়াবহ জলাবদ্ধতার শিকার হতে হয় আমাদের।’
ভোমরা স্থলবন্দরে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, ‘ভোমরা স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত সমস্যা অনেক পুরোনো। রাস্তাঘাট ভাঙাচোরা। দীর্ঘদিনেও অবকাঠামোগত সমস্যার সমাধান হয়নি। এর মধ্যে বৃষ্টির পানিতে থইথই করছে বন্দর। প্রধান সড়কটি কাদা-পানিতে ভর্তি। এ কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।’
জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির বলেন, জলাবদ্ধতা সাতক্ষীরার প্রধান একটি সমস্যা। জলাবদ্ধতা নিরসনে সমম্বিত উদ্যোগ নেয়া হবে।