বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বর্ষায় জমেনি নৌকা কেনাবেচা

  •    
  • ৫ আগস্ট, ২০২১ ১২:১৩

নৌকা বিক্রেতা কৃষ্ণ রায় বলেন, ‘গত বছর যে নৌকা বিক্রি করছি সাড়ে ৪ হাজার টাকায়, এ বছর সেই নৌকা সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। শুধু পানি না হওয়ায় প্রতিটা নৌকায় ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা ধরা।’

মানিকগঞ্জের ঘিওরে ধলেশ্বরী নদীর পাশে মাঠজুড়ে দেখা মিলবে বিভিন্ন আকারের শ শ বাহারি কাঠের নৌকা। প্রতিবছর বর্ষায় এখানে বসে ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাট।

ঘিওর সরকারি কলেজ ও ঈদগাঁর মাঠে বর্ষাজুড়ে প্রতি বুধবার বসে এই হাট।

সেখানে মানিকগঞ্জ ছাড়াও আশপাশের জেলার মানুষ আসেন পছন্দের নৌকা কিনতে। বরাবরই জমজমাট থাকে এই হাট; বেচাকেনা হয় শ শ নৌকা।

হাটের পাশেই ধলেশ্বরী নদী থাকায় নৌকা কিনে সেই নৌকায় করেই বাড়ি ফেরেন ক্রেতারা। তবে এ বছর বেচাকেনা একেবারে কম বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, বর্ষায় পানি কম হওয়ায় ঘোড়ার গাড়ি ও ভ্যানে করে নৌকা বাড়িতে নিতে হচ্ছে। পরিবহন ব্যয় বেশি হওয়ায় নৌকার ক্রেতা কমেছে।

শিবালয়ের শাহিলী এলাকার নৌকা ক্রেতা মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘শাহিলী এলাকা অনেক নিচা। টানা কয়েক দিন বৃষ্টি হইলেই পানি হইয়্যা যায়। আর বর্ষাকালে নৌকা ছাড়া বাড়ি থেকে বাইর হওয়া যায় না। এই কারণে হাটে আইস্যা ১৭০০ টাকা দিয়্যা ১১ হাতের একটা নৌকা কিনলাম।’

দৌলতপুরের আরেক ক্রেতা আজিজুল রহমান বলেন, ‘আমাগো বারোমাসই নৌকা লাগে। বিশেষ কইর‌্যা বর্ষাকালে নৌকা ছাড়া কোথাও যাওয়া যায় না। রাস্তাঘাট পানির তলায় থাকে। এইবার পানি না হওয়ায় নৌকার দাম একবারে সস্তা। আরেকটু সস্তায় পাইলে কয়েকটা কিনুম।’

হরিরামপুরের তবিজ উদ্দিন বলেন, বন্যা আইতেছে। তাই আগেই সস্তায় ভালো নৌকা কিনা রাখলাম। বন্যার সময় পানি বেশি হইলেই দাম বাড়ায় নৌকার কারিগররা।

নৌকা বিক্রেতা ঘিওরের কুস্তার ইকবাল হোসেন বলেন, ‘সাভার থেকে পাইকারি দরে নৌকা কিনে ঘিওরের হাটে বিক্রি করি। ঘিওর হাটে নৌকার অনেক চাহিদা। এই হাটে মানিকগঞ্জ ছাড়াও টাঙ্গাইল, নাগরপুর, সাভার, ধামরাইয়ের লোকজন নৌকা কিনতে আসেন। প্রতি হাটে শ শ নৌকা বেচাকেনা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘পানির সঙ্গে নৌকার দামের একটা সম্পর্ক আছে। পানি হলে ভালো দাম পাই। আর না হলে মোটামুটি দামে বেচতে হয়। অনেক সময় লসও হয়।’

দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে নৌকা বিক্রেতা কৃষ্ণ রায় ঘিওর হাটে নৌকা বিক্রি করে আসছেন। তিনি এই হাটে চাম্বুল, স্টিলবডি, আকাশমনি, আম, জাম, কাঁঠাল গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন আকারের বাহারি নৌকা বিক্রি করেছেন।

তিনি বলেন, ‘গত বছর যে নৌকা বিক্রি করছি সাড়ে ৪ হাজার টাকায়, এ বছর সেই নৌকা সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। শুধু পানি না হওয়ায় প্রতিটা নৌকায় ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা ধরা।’

ঘিওর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘ঘিওরের ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাটে প্রচুর নৌকা ওঠে। বিশেষ করে বন্যার আগে ও বন্যার মধ্যে হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় দেখা যায় সবচেয়ে বেশি। নদীতে বর্ষার পানি ঢুকলেই মানিকগঞ্জের দৌলতপুর, শিবালয় ও হরিরামপুরসহ উপজেলার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যায়। যার ফলে বর্ষা মৌসুমে এসব এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসা ডিঙি নৌকা।’

এই হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের যেকোনো সমস্যায় সার্বিক সহযোগিতা করা হয় বলেও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর