বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘এখন আর মিথ্যা পরিচয় দিয়া কিছু করতে হয় না’

  •    
  • ১ আগস্ট, ২০২১ ২২:২০

আমেনা বেগম বলেন, ‘আগে আমরা ছিটে থাকতাম। খুব দুঃখ-কষ্ট করতাম। এখন বাংলাদেশ হয়ে আমাদের রাস্তাঘাট হইছে, স্কুল-কলেজ হইছে। অনেক সুযোগ-সুবিধা পাইতেছি। এখন আর মিথ্যা পরিচয় দিয়া কিছু করতে হয় না।’

৬৮ বছর ধরে বাংলাদেশ-ভারতের ছিটমহলের বাসিন্দাদের ছিল না কোনো রাষ্ট্রীয় পরিচয়। বঞ্চিত ছিলেন নাগরিক সুবিধা থেকে।

২০১৫ সালের ১ আগস্ট ছিটমহল বিনিময় হওয়ায় রাষ্ট্রীয় পরিচয় পেয়েছেন বাংলাদেশে ভারতীয় ছিটমহলের ৩৭ হাজার ও ভারতে বাংলাদেশের ছিটমহলের ১৪ হাজার মানুষ।

দেশের অন্য নাগরিকদের মতো তারা এখন সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন।

বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দা মো. আগবর বলেন, ‘বাংলাদেশ হওয়ার পর রাস্তা হইছে, নদীতে বাঁধ হইছে, জমি-জায়গা রেজিস্ট্রি হইতেছে। আগে বাংলাদেশও না, ভারতও না; খুব কষ্ট হচ্ছিল। এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো আছি।’

আমেনা বেগম বলেন, ‘আগে আমরা ছিটে থাকতাম। খুব দুঃখ-কষ্ট করতাম। এখন বাংলাদেশ হয়ে আমাদের রাস্তাঘাট হইছে, স্কুল-কলেজ হইছে। অনেক সুযোগ-সুবিধা পাইতেছি। এখন আর মিথ্যা পরিচয় দিয়া কিছু করতে হয় না।’

জমির উদ্দিন জানান, আগে কোনো বিচার-সালিশও হতো না। এখন আর কোনো সমস্যা নেই। তাদের ১১৯ নম্বর বাঁশকাটা ছিটমহলে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, রাস্তা হয়েছে।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর নিউজবাংলাকে জানান, বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে সরকারের সব ধরনের উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, স্কুল-কলেজসহ ব্যপক উন্নয়ন হয়েছে ও উন্নয়ন কাজ এখনও চলছে। এখানে কর্মস্থানেরও সৃষ্টি হয়েছে।

বিলুপ্ত ছিটমহল বাসিন্দাদের সব রকমের নাগরিক সুবিধা দেয়ার জন্য তৈরি হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান

আগে তারা নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত থাকলেও এখন স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে।

এদিকে এই দিনটি উদযাপনের জন্য পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল গারাতির মফিজার রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠে শনিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে সীমিত পরিসরে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

কলেজের শহীদ মিনারে ছয়টি মশাল ও ৬৮টি মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়।

পঞ্চগড়-নীলফামারী জেলা বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি বাংলাদেশ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সভাপতি মফিজার রহমান এই দিনকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান।

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিনের পিছিয়ে পড়া এই জনগোষ্ঠীকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন পাকা ঘর। মূল ভূখন্ডের মানুষ যেসব সুযোগ সুবিধা পায় তাদের জন্য সেসব নিশ্চিত করা হচ্ছে।’

১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ ভাঙার পর এক দেশের ভূখণ্ড থেকে যায় অন্য দেশের অংশে। ভারতের ছিল ১১১টি ছিটমহল আর বাংলাদেশের ৫১টি। বাংলাদেশের ছিটমহলগুলোর মধ্যে লালমনিরহাটে ৫৯টি, পঞ্চগড়ে ৩৬টি, কুড়িগ্রামে ১২টি ও নীলফামারীতে ৪টি ছিল। আর ভারতে ছিল কুচবিহারে ৪৭টি আর জলপাইগুঁড়িতে চারটি।

দুই দেশের চেষ্টার পর ২০১৫ সালের ১ আগস্ট ছিটমহল বিনিময় হয়। বাংলাদেশি ভূখণ্ডে যোগ হয় ১৭ হাজার ১৬০ দশমিক ৬৩ একর জমি। এরপর শুরু হয় এই ভূখণ্ড ও সেখানকার মানুষের উন্নয়ন কাজ।

এ বিভাগের আরো খবর