করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শাটডাউন নামে পরিচিতি পাওয়া কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই রোববার খুলে দেয়া হয়েছে পোশাক কারখানাসহ রপ্তানিমুখী সব শিল্প ও কলকারখানা। এ কারণে নারায়ণগঞ্জের শিল্প ও রপ্তানিমুখী কারখানার শ্রমিকরা তাদের কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন।
ফতুল্লার বিসিক শিল্প নগরীতে রোববার সকালে ছোট-বড় মিলিয়ে ছয় শতাধিক রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা এবং সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডসহ নগরীর বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন।
তবে হঠাৎ করে রপ্তানিমুখী শিল্প ও কলকারখানা খুলে দেয়ায় ঈদে বাড়ি যাওয়া অনেক শ্রমিক কাজে ফিরতে পারেননি।
অধিকাংশ শ্রমিকের অভিযোগ, কঠোর লকডাউন থাকায় যানবাহন না পেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ট্রাক, পিকআপভ্যান, অটোরিকশা, ভ্যান এমনকি হেঁটে ফিরেছেন তারা।
ঝিনাইদহ থেকে আসা পোশাকশ্রমিক হাসিবুল ইসলাম জানান, হঠাৎ করে যদি কেউ সিদ্ধান্ত দেয় তাহলে তো কাজে ফেরা সম্ভব না। মালিকপক্ষের চাপে হঠাৎ করে কারখানা খুলে দেয়ায় তার মতো লাখ লাখ শ্রমিক বিপাকে পড়ে গেছেন।
মো. সবুজ নামে এক পোশাকশ্রমিক বলেন, ‘আমাদের সরকার কারখানা খুলে গাড়ি বন্ধ রাখছে কেন? কারখানা যদি খুলে গাড়ি খুলবে না কেন? গাজীপুর থেকে ঢাকা আসছি ভ্যানগাড়ি দিয়ে।
‘অটো দিয়ে আসলে পুলিশ মিটার ভেঙে ফেলে। গার্মেন্টস মালিক শ্রমিকের দুঃখ বুঝে না। শুধু আমি না আমার মতো শত শত লোক গ্রামে গিয়েছে। গাড়ি আসলে পুলিশ ধরে ৫০০ টাকা নেয়। আইডি কার্ড নিয়ে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখে।’
জামালপুর থেকে আসা আলেয়া নামের এক নারী শ্রমিক জানান, তিনি জামালপুর থেকে স্বাভাবিক ভাড়া ৩০০ টাকা হলেও তিনি ১ হাজার টাকা খরচ করে নারায়ণগঞ্জে এসেছেন।
শেরপুরের কাশেম মিয়া নামে আরেক শ্রমিক বলেন, ‘আমারে গত পরশু মেসেজ দিয়ে কইছে গার্মেন্টস খোলা। কাইল সকালে রওনা দিয়া আসছি রাইত ৩টা বাজে। ভাড়া লইছে ডাবলের থিকাও বেশি। বাড়ি থিকা আইতে আমার ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।’
বিকেএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি (১ম) এম এ হাতেম নিউজবাংলাকে জানান, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বিসিক শিল্প নগরীতে ৬৩০টি কলকারখানা ও রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানায় শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেড, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার ও সোনাগাঁসহ নগরীতে গড়ে ওঠা প্রায় ৮০০ শিল্পপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। সেখানেও কাজে ফিরছেন অসংখ্য শ্রমিক।
তিনি আরও জানান, হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত হওয়ায় যারা গ্রামে গিয়েছেন তাদের আসতে কষ্ট হয়েছে। কারখানা খোলার কারণে শ্রমিকদের দ্বারা তৈরি পণ্য করোনা পরিস্থিতিতেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে।