ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের ৩৮ দাগ এলাকার জলাধারে আস্তানা গাড়া বিরল প্রজাতির মিঠা পানির একটি কুমিরকে উদ্ধারের দ্বিতীয় চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে।
শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অভিযান চলিয়েও ধরা সম্ভব হয়নি কুমিরটিকে। তিন দফা জালে আটকা পড়লেও প্রতিবারই জাল ছিঁড়ে বের হয়ে যায় কুমিরটি। অবশেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এ উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
এ অভিযানের প্রধান বন্যপ্রাণী সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের মৎস্য বিশেষজ্ঞ মো. মফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, দ্বিতীয় দফায় উদ্ধার অভিযান সফল না হওয়ায় আপাতত উদ্ধার অভিযান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পানি কমলে এ উদ্ধার অভিযান আবার চালানো হবে।
‘তবে বর্ষার পানিতে ওই ক্যানেল তলিয়ে গেলে কুমিরটি স্বেচ্ছায় নদীতে বের হয়ে গেলে আর উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করার প্রয়োজন হবে না।’
তিনি বলেন, ‘উদ্ধার অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পর এলাকাবাসীকে নিয়ে একটি সচেতনতামূলক সভা করা হয়। গ্রামবাসীকে কুমিরটিকে বিরক্ত করতে না বলা হয়েছে। কেননা কুমিরটিকে কেউ বিরক্ত না করলে কুমির কারো ক্ষতি করবে না।’
তবে ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই দফা ব্যর্থ অভিযানের পর তারা আতংকিত হয়ে পড়েছেন।
শুক্রবার এ উদ্ধার অভিযানে প্রাণি সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের ১২ জনের একটি দলের সঙ্গে স্থানীয় ১০ জেলে অংশ নেন।
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের ওয়াফিজ মাতুব্বরের ডাঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন বিশ্বাস বলেন, তিনি এক হাজার ৪০০ হাত লম্বা ও ৩২ হাত চওড়া একটি জাল এবং অপর জেলে মীর মালতের ডাঙ্গী গ্রামের চানু মোল্লা ৪ হাজার হাত লম্বা ও ২০ হাত চওড়া এই দুটি জাল দিয়ে বেশ কয়েকবার কুমিরটি ধরার চেষ্টা করেন।
বিকেল তিনটা, সাড়ে তিনটা ও পাঁচটার দিকে তিন দফা কুমিরটি জালে আটকা পড়ে, কিন্তু প্রতিবারই জাল ছিড়ে বের হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ধারণা করা হয়েছিল, কুমিরটি ১০ ফুট হবে। তবে সম্ভবত কুমিরটির আকার আরও বড়।
এর আগে গত বুধবার কুমিরটি উদ্ধারের জন্য প্রথম চেষ্টা করা হয়। কিন্তু পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টা করেও কুমিরটি ধরা সম্ভব হয়নি।
যে জলাধারে কুমিরটি আস্তানা গেড়েছে সেটি এলাকাবাসীর কাছে ফালুর খাল হিসেবে পরিচিত। এ জলাধারের দৈর্ঘ্য আনুমানিক এক হাজার মিটার ও প্রস্থ ৭৫ থেকে ১০০ মিটার।
গত ২৪ জুলাই সকালে ওই কুমিরটি চর এলাকার একটি জলাধারে দেখেন এলাকাবাসী। এরপর ওই এলাকায় মাইকিং করে সর্বসাধারণকে ওই জলাশয়ে না নামার পরামর্শ দেয়া হয়।
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান বলেন, কুমিরটি ধরার জন্য গত বুধ ও শুক্রবার দুটি অভিযান ব্যর্থ হয়েছে। ফলে এলাকাবাসীর মনে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।