পোশাক শ্রমিক আসাদুলের বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায়। কোরবানির ঈদের ছুটিতে গিয়েছিলেন গ্রামের বাড়িতে। ঈদ ভালোই কেটেছে। তবে দুর্ভোগের পড়েছেন হঠাৎ কারখানা খোলায়।
শাটডাউন হিসেবে পরিচিতি পাওয়া চলমান কঠোর লকডাউনে রোববার থেকে শিল্পমুখী কারখানার খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। এরপরই ডাক পড়েছে আসাদুলের মতো পোশাক শ্রমিকদের।
শাটডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ঢাকায় আসতে যেমন দ্বিগুণ তিনগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে, গাড়ি না পাওয়ায় অন্য নানা ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে।
ময়মনসিংহের পাটগুদাম এলাকায় কাঁধে ভারী ব্যাগ নিয়ে আসাদুল বলেন, ‘চাকরি বাঁচাতে গার্মেন্টসে যাচ্ছি। ৫৫ টাকার ভাড়া ৩৮০ টাকা দিয়ে পাটগুদাম পর্যন্ত এসেছি।
‘গার্মেন্টস পর্যন্ত যেতে কয়েক হাজার টাকা খরচ করে পকেট খালি হয়ে যাবে। আমাদেরকে এভাবে ভোগান্তিতে ফেলার কোনো মানে হয় না।’
গার্মেন্টস খোলার সময় তাদের যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে গণপরিবহন চলতে দেয়ার দরকার ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নেত্রকোণার দূর্গাপুর উপজেলার মারুফ ও লায়লা দম্পতির দুজনই গাজীপুরে পোশাক কারখানায় কাজ করেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় তাদের কারখানা থেকে মোবাইল ফোনে এসএমএস আসে রোববার যেতে হবে।
এসএমএস পেয়ে শনিবার সকালে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন তারা। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় হেঁটে ও তিন চাকার যানে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে পৌঁছান ময়মনসিংহের পাটগুদাম ব্রিজ পর্যন্ত।
হেঁটেও রওনা হন অনেকে। ছবি: নিউজবাংলাতারা জানান, সকাল ১০টার দিকে রওনা দিয়ে ভ্যান, রিকশা, অটোরিকশা ও সবশেষ সিএনজি দিয়ে পাটগুদাম পর্যন্ত এসেছেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করবে এমন অজুহাতে প্রত্যেকটি যানে তিন থেকে চারগুণ বেশি ভাড়া নিয়েছে। তবুও বাধ্য হয়ে ভাড়া দিতে হয়েছে।
রেহেনা, মারুফ ও আসাদুলের মতো ময়মনসিংহ এলাকার হাজারও পোশাক শ্রমিক শনিবার সকালে ঢাকায় কারখানায় উদ্দেশে রওনা হন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় যে যেই গাড়ি পেয়েছেন তা দিয়েই কোনোরকম গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।
ময়মনসিংহ জেলা ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘গার্মেন্টস খুলে দেয়ায় শ্রমিকরা জটলা করেন পাটগ্রাম ব্রিজ মোড়ে। সেখান থেকে ছোট যানবাহনে গার্মেন্টসে যাওয়ার চেষ্টা করেন তারা।
‘যেহেতু গার্মেন্টস খোলা, তাই শ্রমিকদের যাতায়াতে ভোগান্তির বিষয়টি চিন্তা করে আমরা কঠোর হয়নি। তবে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ মাস্ক পরতে বলা হয়েছে।’