নওগাঁর মহাদেবপুরে হাত-পা বেঁধে শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার দুপুরে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে বাগাচারা এলাকায় নির্মাণাধীন একটি অটো গ্যাস ফিলিং স্টেশনের সাইট অফিসে এই ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার শিশুটি উপজেলার বাগাচারা গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে শিহাব হোসেন। বয়স ১১। এ ঘটনায় সন্ধ্যার দিকে পুলিশ বকুল হোসেন নামের নাইট গার্ডকে আটক করেছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে বাগাচারা এলকায় নির্মাণাধীন একটি অটো গ্যাস ফিলিং স্টেশনের সাইট অফিসে মোবাইল ফোন চুরির অপবাদে শিহাবকে হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করেন নাইট গার্ড বকুল হোসেন।
এরপর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ঘরে আটক রাখ হয় শিশুটিকে। পরে বাবা-মা ও এলাকাবাসী জানতে পেরে দুপুর ২টার দিকে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় পালিয়ে যান নির্যাতনকারী ওই নাইটগার্ড।
বাগাচারা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা শরিফুল আলম বলেন, ‘বেলা ১২টার থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে শিহাবকে। শিশুটির কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়ে আমিসহ কয়েকজন গেলে ওই নাইট গার্ড দ্রুত পালিয়ে যায়।’
‘এর পর নির্মাণাধীন ফিলিং স্টেশনের সাইট অফিসে গিয়ে দেখি শিশুটির হাতা-পা দড়ি দিয়ে বাঁধা। আমরা থাকে উদ্ধার করে তার পরিবারকে খবর দিলে তারা এসে নিয়ে যায়।’
স্থানীয় মিজানুর রহমান নামের আরেক বাসিন্দা জানান, ‘সেখানে নির্মাণ কাজ চলছে। এলাকার অনেক শিশুই আশেপাশে খেলাধুলা করে। যা হয়তো তারা পছন্দ করেন না। সেটার কারণে মিথ্যা মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। কারণ ওই শিশুর কাছে আমরা কোনো মোবাইল পাইনি।’
নির্যাতনের স্বীকার শিশু শিহাব বলে, ‘আমি ১২টার দিকে ওখানে খেলছিলাম তখন আমাকে ডেকে নিয়ে যায় ওই নাইট গার্ড আঙ্কেল। এর পর অফিসের রুমে নিয়ে দরজা বন্ধ করে আমার ধরে হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটায়। ওই সময় তিনি বলছিলেন, তুই মোবাইল চোর। আমার মোবাইল চুরি করছিস। ফেরত দে মোবাইল। আমি তখন বলছিলাম আমার কাছে কোনো মোবাইল নাই। আমি চোর নই। তখন আরও পিটাচ্ছিল। তার পর বলিছিল, আর আসবি এদিকে। কেমন লাগছে এখন দেখ।’
শিহাবের বাবা খোরশেদ আলম জানান, ‘মিথ্যা অভিযোগে আমার ছোট্ট ছেলেটাকে নির্যাতন করা হয়েছে। আমার ছেলের কাছে কোনো মোবাইল পাওয়া যায়নি। নির্যাতনকারীর ওই নাইট গার্ডকে আটক করেছে পুলিশ। থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
এ বিষয়ে মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে নাইট গার্ড বকুল হোসেকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নির্যাতনের অভিযোগ স্বীকার করেন।
এ ঘটনায় নির্যাতনের স্বীকার শিশুটির বাবা খোরশেদ আলম একটি মামলা করার জন্য থানায় যান। আটক নাইট গার্ড বকুল হোসেকে থানা হাজতে রাখা হয়েছে।