বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পদ্মায় মুহূর্তেই বিলীন ৮ ঘর, আতঙ্কে শত পরিবার

  •    
  • ৩০ জুলাই, ২০২১ ১৭:২৮

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে মুন্সিগঞ্জে পদ্মার তীব্র স্রোতে ৮টি ঘর ভেঙে পড়ে। আর সকাল ৭টার দিকে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ফেরিঘাট এলাকায় দ্বিতীয় দফার ভাঙনে নদীতীরবর্তী প্রায় ৩০ মিটার বিলীন হয়।

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়েছে আটটি ঘর। দ্বিতীয় দফায় ভাঙন দেখা দিয়েছে রাজবাড়ী সদর উপজেলায়ও।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে মুন্সিগঞ্জে পদ্মার তীব্র স্রোতে ৮টি ঘর ভেঙে পড়ে। আর সকাল ৭টার দিকে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ফেরিঘাট এলাকায় দ্বিতীয় দফার ভাঙনে নদীতীরবর্তী প্রায় ৩০ মিটার বিলীন হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙন দেখা দিলেও প্রশাসন এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এতে দুই এলাকায় কয়েক শ স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে। যেকোনো সময় ভাঙনে এসব স্থাপনা নদীগর্ভে চলে যেতে পারে।

মুন্সিগঞ্জ: টঙ্গীবাড়ি উপজেলার হাসাইল বানারী ইউনিয়নের পূর্ব হাসাইলে পদ্মার তীব্র স্রোতে ভাঙন শুরু হয় বেলা ১১টার দিকে। কয়েক ঘণ্টায় বিলীন হয় আটটি ঘরসহ কয়েক শ মিটার জমি।

ভাঙন এতটাই দ্রুত ছিল যে ঘর সরানোর সময়ই পাননি বাসিন্দারা। পরে এলাকাবাসী রশি দিয়ে ৬টি ঘর উদ্ধার করতে পারলেও আসবাবপত্র নদীর স্রোতে ভেসে যায়।

ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে স্থানীয় আলম শেখের তিনটি, জিয়াসমিন বেগমের একটি, মো. খোরশেদের দুটি ও নূর মোহাম্মদ দেওয়ানের দুটি ঘর ভাঙনে কবলে পড়ে। এ ছাড়া ভাঙনের মুখে রয়েছে পূর্ব হাসাইল জামে মসজিদ, কবরস্থান, ধাতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শত শত বসতবাড়ি।

পদ্মায় ভেঙে পড়া ঘর উদ্ধারের চেষ্টা স্থানীয়দের। ছবি: নিউজবাংলা

আলম শেখ বলেন, ‘হঠাৎ কইরা ভাঙন শুরু হইলে আমার তিনটা বসতঘর একবারে নদীতে তলিয়ে গেছে। কয়েকটি ঘরের অংশ কোনো রকমে ওঠানো হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা চাই। নয়তো আশপাশের সব ভেঙে নিয়ে যাবে নদী।’

জিয়াসমিন বেগম বলেন, ‘ঢাকায় কাজ করি, স্বামী নেই। চার সন্তান নিয়ে একটা ঘরে থাকি। গতকাল আসছি ঢাকা থেকে। আজকে আমার ঘর বিলীন হয়ে গেছে।’

আরেক নারী বলেন, ‘ঘরের মধ্যে ছিলাম, হঠাৎ ভাতিজা আইসা বলে চাচি নদী ভাঙতাছে। যদি তখন না বাইর হইতাম, ঘরের লগে মা-মেয়ে সবাই তলায়ে যাইতাম।’

ক্ষতিগ্রস্ত খোরশেদ বলেন, ‘ঘরের চাউলের ড্রামটাও বাইর করতে পারি নাই। সব নিয়া গেল নদীতে।’

দুলাল ব্যাপারী নামে একজন অভিযোগ করেন, ‘আমরা ইউএনওর অফিসে গিয়ে ভাঙনের কথা জানিয়েছি। তিনি ব্যবস্থা নিলে আজকে হয়তো আমরা এত ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতাম।’

হাসাইল বানারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হালদার বলেন, ‘আমি এমপি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি, তারা এখন ব্যবস্থা নেবেন। ইতোমধ্যে আমি একাধিকবার প্রশাসনকে নদীর পাড়ে বাঁধ দেয়ার জন্যও বলেছি।

টঙ্গীবাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি।

রাজবাড়ী: তীব্র স্রোতে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের গোদারবাজার অংশে কংক্রিটের সিসি ব্লকের প্রায় ২০০ মিটারে ভাঙন দেখা দিয়েছিল আগেই। শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে দৌলতদিয়ার ফেরিঘাট এলাকায় দ্বিতীয় দফায় ভাঙন শুরু হয়। এ সময় প্রায় ৩০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

রাজবাড়ীতে পদ্মার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে নদীতীরবর্তী অংশ। ছবি: নিউজবাংলা

ভাঙন দেখা দেয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে এই এলাকায় কয়েক শ বসতবাড়ি। দৌলতদিয়া ইউনিয়নের মজিদ শেখের পাড়ার আবু মেম্বার, আবুল মণ্ডল, সোহেল মুন্সী, মোকছেদ মণ্ডল, উজ্জ্বল সরদারসহ বেশ কয়েকজনকে বাড়িঘর সরিয়ে নিতেও দেখা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা হানেফ মণ্ডল বলেন, ‘কয়েক বছর আগে ৪-৫ কিলোমিটার দূরে ছিল পদ্মা নদী। সেখান থেকে শুনে আসতেছি ভাঙন রোধে কাজ শুরু হবে। তবে বালুর বস্তা ফেলা ছাড়া এখানে কোনো কাজ হয়নি।’

রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, ‘পদ্মার ভাঙন রোধে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। নতুন করে যে ভাঙন শুরু হয়েছে, সে ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হবে।

‘এরই মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভাঙন রোধে কাজ শুরু করা হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর