গাজীপুর মহানগর কমিটিতে পদ পেতে জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স কমিয়েছেন টঙ্গী থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোশিউর রহমান সরকার বাবু। গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগে সভাপতি প্রার্থী বাবু নিজেও বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
তার দাবি, জাতীয় পরিচয়পত্র ও শিক্ষা সনদে তার যে জন্ম তারিখ দেয়া ছিল তাতে এক বছর বেশি ছিল। ছাত্রলীগের পদ পেতে নির্ধারিত বয়সসীমা পেরিয়ে যাওয়ায় এখন আদালতে আবেদন করে আসল জন্ম তারিখ দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র করেছেন।
তবে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি, বয়স পার হয়ে যাওয়ায় এনআইডি ও শিক্ষা সনদ জালিয়াতি করে ছাত্রলীগের সভাপতির পদ পাওয়ার জন্য মাঠে নেমেছেন তিনি।
গাজীপুর ছাত্রলীগ থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়। এর পর সাড়ে তিন বছরেও কমিটি দেয়নি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সম্প্রতি এ কমিটি দেয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সংগঠনের নেতৃত্বে আসতে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২৯ বছর। সম্মেলনের তারিখ থেকে এ বয়স গণনা করা হয়।
ছাত্রলীগ নেতার বাবু ২০০৩ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় অংশ নেন। সেই সনদে তার জন্ম তারিখ ছিল ১৯৮৮ সালের ১ নভেম্বর। একই জন্ম তারিখ ব্যবহার করা হয়েছে তার প্রথম এনআইডিতে। ওই এনআইডি ও শিক্ষা সনদ অনুযায়ী সম্মেলনের দিন বাবুর বয়স ছিল ২৯ বছর ৩ মাস ৪ দিন।
স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ, বয়সসীমা পার হয়ে যাওয়ায় সভাপতি হতে জালিয়াতির মাধ্যমে আরেকটি এনআইডি তৈরি করেন বাবু। এতে আগের শিক্ষা সনদ ও এনআইডিতে থাকা জন্মসাল এক বছর কমিয়ে ১ নভেম্বর ১৯৮৯ সাল করা হয়।
সংশোধন করা জাতীয় পরিচয়পত্র
জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ পরিবর্তনের বিষয়টি স্বীকার করে বাবু জানান, তার আগের এনআইডি অনুযায়ী জন্ম তারিখ ১ নভেম্বর ১৯৮৮। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে বয়সসীমা ২৯ বছর। গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলনের সময় তার বয়স তিন মাস বেশি ছিল। তিনি চান না তিন মাসের জন্য কোনো ঝামেলা হোক।
এজন্য তার আসল জন্ম তারিখ দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র করার জন্য গাজীপুর আদালতে একটি আবেদন করেন। সংশোধনের ওই আবেদনের পর রায়ের কপি ইসিতে জমা দিয়ে বয়স এক বছর কমিয়ে নতুন করে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন।
এভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তন করা যায় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো জালিয়াতি করিনি। আদালতে আমার মা ও বোনরা গিয়েছিলেন। পরে আদালতের রায়ের মাধ্যমে বয়স পরিবর্তন করেছি।’
এত বছর পর কেন জন্ম তারিখ পরিবর্তন করলেন জানতে চাইলে বলেন, ছাত্রলীগের পদ পেতে তিন মাস অতিরিক্ত বয়সের কারণে যেন কোনো ঝামেলায় পড়তে না হয় সেজন্য আসল জন্মতারিখ দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র করেছেন।