ভোলার দ্বীপ উপজেলা মনপুরায় মেঘনার অব্যাহত ভাঙন ও প্রবল জোয়ারে হুমকির মুখে রয়েছে বেড়িবাঁধগুলো। স্রোতের মুখে বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন।
দ্রুত সংস্কার করা না হলে যে কোনো সময় বাঁধের বিভিন্ন স্থান সম্পূর্ণ ভেঙে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢোকার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
১ নম্বর মনপুরা ইউনিয়নের পশ্চিম কুলাগাজির তালুকের রাম নেওয়াজ মৎস্য ঘাট সংলগ্ন বেড়িবাঁধ জোয়ারের তোড়ে প্রায় ভেঙে গেছে। যেকোনো এ অংশ সম্পূর্ণ ভেঙে ভেতরে জোয়ারের পানি প্রবেশ করতে পারে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়বে কয়েক হাজার মানুষ।
এ এলাকার গ্রামগুলোর বাসিন্দারা এমনিতে দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বৃষ্টির পানি জমে পূর্ব কালিগাজির তালুক ও পশ্চিম কুলাগাজির তালুক গ্রামের অনেকের ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। মনপুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠও পানিতে ডুবে রয়েছে। পানি বের করার কোন ব্যবস্থাই এখানে নেই।
এখন জোয়ারের পানি ঢুকলে তাদের ভোগান্তির শেষ থাকবে না। এজন্য বিকল্পভাবে বেড়িবাঁধের বাইরে পানি বের করার দাবি জানিয়েছেন এখানকার বাসিন্দারা।
হাজিরহাট ইউনিয়নে দেখা যায়, জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে বেড়িবাধঁগুলো প্রায় বিধ্বস্ত। বাঁধের বাইরে যেখানে জিওব্যাগগুলো দেয়া হয়েছে তার নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। আবার অনেক স্থানে নেই কোনো জিওব্যাগ।
চৌধুরীবাজারের পূর্বপাশের বেড়িবাঁধের অবস্থাও খুবই নাজুক অবস্থায় দেখা গেছে। হাজিরহাট ইউনিয়নের সোনারচর, চরযতিন, চরজ্ঞান, দাসেরহাট এলাকায় মেঘনার ভাঙনের তীব্রতা রয়েছে।
এ ছাড়া হাজিরহাট ইউনিয়নের ভুঁইয়ার হাট বিকল্প সড়ক টু উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়ন পর্যন্ত কোনো বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতিদিন জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে চর মরিয়ম গ্রাম।
উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের মাস্টার হাটের পশ্চিমপাশের বেড়িবাঁধ ও দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের সূর্যমুখী বেড়িবাঁধ, বাতিরখাল ও ঢালী মার্কেট সংলগ্ন এলাকার বেড়িবাঁধের অবস্থাও নাজুক।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছুদিন আগে বাঁধগুলো সংস্কার করেছিল। তবে যারা কাজ করেছেন তারা ঠিকমতো সংস্কার করেননি। কিছু জায়গায় জিও ব্যাগ ছাড়াই মাটি দেয়ায় জোয়ারের স্রোতে আবারও ভেঙে যাচ্ছে বেড়িবাঁধ।
কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
তাদের দাবি, উপজেলা সুরক্ষায় দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। আর ভাঙা বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্কার করা না হলে কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়বে। এ ছাড়া ভেতরে জমে থাকা পানি বের করথে স্লুইস গেট নির্মাণ করতে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান বলেন, ‘বেড়িবাঁধগুলো সংস্কার করা হয়েছে। ভেতরের পানি সরানোর জন্য মানুষ আমাদের না জানিয়ে বাঁধ কেটে পাইপ দিয়ে পানি সরানোর কারণে বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। যেসব স্থানগুলোতে বেড়িবাঁধ ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে সেসব স্থানগুলো মেরামত করার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম মিঞা জানান, ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে যেকোনো সময় লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকতে পারে। বিষয়টি পাউবোকে জানানো হয়েছে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।