বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সেতু থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম সরিয়ে ‘ভুল স্বীকার’

  •    
  • ২৯ জুলাই, ২০২১ ১৯:৪৩

‘একজন বীর মুক্তিযোদ্ধোর নামে করা সেতুর নাম কীভাবে পরিবর্তন করে সড়ক বিভাগ। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এটা একটি পরিকল্পিত বা দায়িত্বহীন কাজ। মুক্তিযোদ্ধাদের চরমভাবে অবমাননা করা হয়েছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।’

সেতুর নাম ছিল বীর মুক্তিযোদ্ধর নামে। সেই নামে আনা হয়েছে পরিবর্তন। এখানেই শেষ নয়, সেতুর পাশে টাঙিয়ে দেয়া সেই নামের সাইনবোর্ড। এ নিয়ে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ।

হঠাৎ সেতুর নাম পরিবর্তন করে আলোচনায় নওগাঁর সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ভুল স্বীকার করেছেন নির্বাহী প্রকৌশলী মোসাজেদুর রহমান। তবে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় সাংবাদিকদের ক্ষোভও ঝেড়েছেন তিনি।

নওগাঁর পত্মীতলায় আত্রাই নদীর ওপর ১৯৯৩ সালে সেতুটি নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। পরের বছর ১১ জানুয়ারি সেতুটি উদ্বোধন করা হয়। সেই সময় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির মুখে উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সিদ্দিক প্রতাপের নামে সেতুটির নামকরণ করা হয়। সেতুটির মাধ্যমে পত্মীতলা উপজেলার সঙ্গে পাশের সাপাহারের মানুষের যোগাযোগ সহজ হয়।

সম্প্রতি জেলায় ‘স্থান শনাক্তকরণের সুবিধার্থে’ সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন সব সড়ক ও ব্রিজের পাশে সাইনবোর্ড বসানো হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ওই সেতুর দুই পাশে ‘পত্মীতলা সেতু’ লিখে দুটি সাইনবোর্ড বসায় নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

সাইনবোর্ডটি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসীদের নজরে এলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। দ্রুত সাইনবোর্ডটি সরিয়ে নিতে ২০ জুলাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান নওগাঁ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক উদ্দীন আহমেদসহ উপজেলার অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা।

পত্মীতলা উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সিদ্দিক প্রতাপ ছিলেন আমাদের উপজেলার কৃতি সন্তান। সেই সময় আমাদের দাবিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এই সেতুর নামকরণ করেন। এর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। হঠাৎ সেতুর নাম পরিবর্তন করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করেছে সড়ক বিভাগ। দ্রুত সাইনবোর্ডটি অপসারণ করা না হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক উদ্দীন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সড়ক ও জনপথ বিভাগ হঠাৎ করে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক প্রতাপ সেতু নামের পরিবর্তে কেনো পত্মীতলা সেতু নামে সাইনবোর্ড বসিয়েছে তা বোধগম্য নয়। তারা দ্রুত সাইনবোর্ডে বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম না লিখলে, আমরা প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশসহ অন্যান্য কঠোর পদক্ষেপ নেব।’

নজরুল একাডেমি নওগাঁ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, ‘এত বলার পরও এখন পর্যন্ত কেনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। যা সত্যিই হতাশাজনক। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধোর নামে করা সেতুর নাম কীভাবে পরিবর্তন করে সড়ক বিভাগ। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এটা একটি পরিকল্পিত বা দায়িত্বহীন কাজ। মুক্তিযোদ্ধাদের চরমভাবে অবমাননা করা হয়েছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।’

এ বিষয়ে নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের পত্মীতলার উপজেলার উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, সাইনবোর্ডটিতে ভুলক্রমে পত্মীতলা সেতু লেখা হয়েছে। শিগগিরই ভুল সংশোধন করে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক প্রতাপ সেতু লেখা হবে।

ভুলের সঙ্গে কারা জড়িত জানতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজেদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিউজবাংলা। প্রশ্ন করা হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। বলেন, ‘এই সামন্য একটি বিষয় নিয়ে আপনি ফোন দিয়েছেন কেনো। কী পাইছেন আপনারা, ভুল তো মানুষেরই হয়, তাই আমাদেরও হয়তো একটি ছোট্ট ভুল হয়েছে। একটি বিষয় নিয়ে এত মাতামাতির কী আছে, এগুলো কি ঠিক করছেন?’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রাও অনেক কথা বলছেন। তাই আমরা সাইনবোর্ডটি সড়ানোর ব্যবস্থা নিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে ফের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক প্রতাপের নাম সাইনবোর্ডে যুক্ত করা হবে। যতটুকু জানি সড়ক বিভাগের রাজশাহী অফিসের ডকুমেন্টে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক প্রতাপের নামে ছিল না। যার কারণে হয়তো এমনটা হয়েছে ভুল।’

এ বিভাগের আরো খবর