গাজীপুরের শ্রীপুরে ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) নামের এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধের পরও প্রতিষ্ঠানটির করা মামলায় গ্রেপ্তার শাহনাজ পারভীনের জামিন হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ৩টায় গাজীপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক শেখ নাজমুন নাহার তাকে জামিন দেন।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী এমদাদুল হক মাসুম। জামিন শুনানির সময় উভয়পক্ষের আইনজীবী ও টিএমএসএসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সোমবার বিকেলে ঋণ পরিশোধের পরও এই এনজিওর করা মামলায় শাহনাজকে গ্রেপ্তার করে শ্রীপুরের পুলিশ। এতে তার ছয় মাসের শিশুকন্যা ফাতেমা একা হয়ে পড়ে।
শাহনাজের স্বামী বারতোপা বাজারের কাপড়ের দোকানি নুরুল আমীন সেদিন বলেছিলেন, ‘আমরা ঋণ নেয়ার পরে দুটি কিস্তি শোধ করতে কিছুটা সময় লাগে। দুই মাস পরই ঋণের টাকা শোধ করি। এ সময় এনজিও আমাদের ঋণ পরিশোধের প্রত্যয়নও দেয়।’
‘এরপরও তারা আমার স্ত্রীর নামে মামলা করে। এ মামলার বিষয়ে আমরা কেউ কিছু জানতাম না। হঠাৎ করে পুলিশ গিয়ে আমার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে।’
নুরুল আমীন বলেন, ‘সমস্যা হয়েছে আমার ছয় মাসের মেয়ে ফাতেমার জন্য। সে এখনও তার মায়ের দুধ ছাড়া কিছুই খায় না। বিকেল থেকেই তার মায়ের জন্য কান্নাকাটি করছে। করোনার মহামারির সময় এমন অমানবিকতায় পড়ব সেটি ভাবতেই পারছি না।’
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে টিএমএসএস এখন বলছে, মামলা প্রত্যাহার না করাটা তাদের ভুল হয়েছে।
জামিনের পর শাহনাজকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
নুরুল আমীন মঙ্গলবার নিউজবাংলাকে জানান, ‘সারা রাত ফাতেমা তার মায়ের জন্য কান্নাকাটি করেছে। তার স্ত্রীকে সকালে আদালতে নেয়া হয়। সেখানে তিনি ফাতেমাকেও নিয়ে যান। তবে বারবার আকুতি জানিয়েও মায়ের কোলে শিশুকে দেয়া যায়নি। সন্তানের কথা ভেবে শাহনাজ অসুস্থ হয়ে পড়েন। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি।’
টিএমএসএস’র গাজীপুর জোনাল ম্যানেজার আতাউর রহমান বলেন, ‘ঋণ পরিশোধ না করায় ওই নারীর নামে মামলা হয়েছিল ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে। আর তিনি ঋণ পরিশোধ করেছিলেন ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু আমাদের ভুল হয়েছে শাহনাজের নামে মামলাটি প্রত্যাহার না করে।
‘শাখা ব্যবস্থাপক বদলি হয়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা এ ক্ষেত্রে দুখঃপ্রকাশ ছাড়া আর কী করতে পারি?’
আদালতে উপস্থিত ছিলেন টিএমএসএস’র লিগ্যাল অ্যাডভাইজার জাহাঙ্গীর আলম হিমু, গাজীপুর জোন জোনাল ম্যানেজার আতাউর রহমান, শ্রীপুর অঞ্চলের এরিয়া ম্যানেজার শিহাব হোসেন, শ্রীপুর-১ শাখা প্রধান আব্দুল আলিম ও মামলার বাদী ডেপুটি সিনিয়র ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আসলাম উদ্দিন মৃধা।