কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে হাওর ভ্রমণ করে সমালোচিত ময়মনসিংহের সেই সংসদ সদস্য এবার বর্জ্য পরিষ্কার করে প্রশংসিত হয়েছেন।
নান্দাইল চন্ডীপাশা হাই স্কুল মাঠে কোরবানি পশুর হাট বসার ফলে যে আবর্জনা জমেছিল তা নেতা-কর্মীদের নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে পরিষ্কার করেন ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন।
পরিষ্কার কার্যক্রমের কিছু ছবি নিজের ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করেন তিনি। সেই পোস্টে এক ঘণ্টার মধ্যে কমেন্ট করেন শতাধিক মানুষ। তারা সবাই এমপির প্রশংসা করেছেন।
এর আগে কঠোর বিধিনিষেধ আমান্য করে হাওর ভ্রমণ করেন এমপি তুহিন। সেই ভ্রমণের ছবিও তিনি নিজেই ফেসবুকে পোস্ট করেন।
ওই ছবিতে দেখা যায়, সংসদ সদস্যের সঙ্গে গাড়িতে গাদাগাদি করে বসে আছেন সাতজন। তাদের কারও মুখেই মাস্ক নেই। এই ভ্রমণের বিষয়ে এমপি বলেছেন, ‘মন চেয়েছে তাই ঘুরতে গিয়েছিলাম।’
ওই ভ্রমণ নিয়ে মাহমুদুল হাসান মিশাদ নামে একজন সংসদ সদস্যের পোস্টে লিখেন, ‘লকডাউন এবং সরকারের বিধিনিষেধ অমান্য করার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আপনি ৷ আপনি জনপ্রতিনিধি হয়ে যদি এমন আইন ও নিয়ম ভাঙেন তাহলে আমরা যারা সাধারণ জনগণ তারা তো সরকারের এমন আইন ও নিয়মকানুন না মানাটাই স্বাভাবিক।’
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে হাট পরিষ্কার করা নিয়ে পোস্ট দেন এমপি তুহিন। সেখানে তিনি লিখেছেন- এই দৃশ্য দেখে কি মনে হচ্ছে মানববন্ধন? না এটা কোনো মানববন্ধন না, নান্দাইল চন্ডীপাশা হাই স্কুলের ঐতিহাসিক মাঠ। যেখানে এই কয়েকদিন আগে কোরবানির পশুর হাট বসেছিল। সবাই যার যার মতো এই মাঠটি ব্যবহার করে টাকা পয়সা রোজগার করে চলে গেছে। কিন্তু মাঠটি অপরিষ্কার করে রেখে গেছে।
কারও এদিকে নজর দেয়ার সময় নেই, স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আগত সকল নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে মাত্র ১০ মিনিট লেগেছে মাঠটি পরিষ্কার করতে। যারা এই মাঠটি ইজারা নিয়ে ব্যবসা করে চলে গেলেন তাদের প্রতি আমার প্রশ্ন, আপনাদের এই মাঠটি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে যত্নশীল হওয়ার প্রয়োজন ছিল না কি?
এই পোস্টে এক ঘণ্টার ব্যবধানে কমেন্ট করেছে শতাধিক লোক। সবগুলো কমেন্টে সংসদ সদস্যের প্রশংসা করেছেন সবাই।
অ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান নামে একজন লিখেছেন, মুজিব আদর্শের সৈনিকরা সবসময় জনস্বার্থে নিবেদিত প্রাণ। ধন্যবাদ মাননীয় এমপি হাজী তুহিন ভাইকে।
হাওর ভ্রমণের পর এমপি তুহিন (মাস্ক পরা) নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন এই ছবি
শরীফ আজহার লিখেছেন, সাধুবাদ জানাই মাননীয় এমপি মহোদয়কে। অচেতনদের সচেতন করতে এমন পদক্ষেপের জন্য।
মোবারক আকন্দ নামে একজন লিখেছেন, ইজারাদারদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করুন। তাহলে পরবর্তীতে এ রকম করবে না।
অলি মাহমুদ লিখেছেন, আহারে, মনে পড়ে গেল সেই ২০০৩/৪ সালের কথা। এই স্কুলে ছাত্র ছিলাম, আর মাঝে মাঝে ক্লাস টিচারের নির্দেশে মাঠ পরিষ্কার করা হতো।
এহসানুল হক আনোয়ার নামে আরেকজন লিখেছেন, মুজিব আদর্শের সৈনিক।
ফেসবুক ছাড়াও সংসদ সদস্যের এমন কাজে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকে।
ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক নূরুল আমীন কালাম নিউজবাংলাকে বলেন, সংসদ সদস্য হয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে গরুর হাটের ময়লা পরিষ্কার করার জন্য নিঃসন্দেহে এমপি প্রশংসার দাবিদার। আসলে এটি পরিষ্কার করার দায়িত্ব ছিল ইজারাদারের।
যার যেই দায়িত্ব সেটাই পালন করা প্রয়োজন। সংসদ সদস্যের এমন কাজ থেকে নিজের কাজের প্রতি সবারই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। জনগণের স্বার্থে তিনি এমন কাজ করে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন।