করোনা রোগীর সেবা দিতে গিয়ে ফরিদপুরে এ পর্যন্ত ৬৪৮ চিকিৎসক, স্বাস্থ্য সহকারী, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন।
এর মধ্যে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩৫০ এবং সিভিল সার্জন অফিসের আওতাধীন সদর জেনারেল হাসপাতালসহ ৯ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৯৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (করোনা ডেডিকেটেড) পরিচালক ডা. সাইফুর রহমান জানান, মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত কোভিড রোগীদের সেবাকাজে নিয়োজিত ৩৫০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে চিকিৎসক ২৬ জন এবং নার্স-ওয়ার্ড বয় ১১৩ জন।
তিনি বলেন, হাসপাতালটিতে শুধু বৃহত্তর ফরিদপুর নয়, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা থেকে আসা করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। করোনার এই দুর্যোগের সময়ে স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত প্রত্যেক কর্মী ঝুঁকি নিয়ে সেবা করে যাচ্ছেন।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩৫০ জন স্বাস্থ্যকর্মী এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।ছবি: নিউজবাংলা
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) ফরিদপুর শাখার সভাপতি ডা. আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী টিটো বলেন, শুধু সরকারি হাসপাতাল নয়, বেসরকারি হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
তিনি বলেন, সরকার স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত কর্মীদের করোনাকালে প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা দিলেও তা ফরিদপুরে বাস্তবায়ন হয়নি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউয়ের প্রধান ডা. অনন্ত কুমার বিশ্বাস জানান, এ ওয়ার্ডে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা হয়। করোনা আক্রান্ত সবচেয়ে গুরুতর রোগীদের সেবা দেয়া হয় আইসিইউতে। এখানকার প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মী সব সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থাকে।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান জানান, জেলা সদরের জেনারেল হাসপাতালসহ ৯ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা চিকিৎসার কাজে নিয়োজিত ২৯৮ জন এ পর্যন্ত কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আক্রান্তদের মধ্যে আমিসহ চিকিৎসক রয়েছেন ৩৩ জন, নার্স-ওয়ার্ড বয় রয়েছেন ৪৯ জন। এছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছেন।’
সিভিল সার্জন জানান, করোনার মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছে ১৭ হাজার ১০২জন, সুস্থ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৩৭ এবং প্রাণহানি হয়েছে ৩৬২ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় ১৫৯ জন আক্রান্ত হয়েছে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৫ জন।