বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিধন্য ও রাজনৈতিক পদচারণায় সমৃদ্ধ বৃহত্তর খুলনা বিভাগ। এটি ছিল অনেকটা তার ‘দ্বিতীয় বাড়ি’।
নিজ জেলা গোপালগঞ্জের সঙ্গে ভৌগলিক দূরত্ব কম এবং সে সময় নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় বঙ্গবন্ধু জীবদ্দশায় ৬৬ বার খুলনায় যান।
ভাষা আন্দোলনসহ পাকিস্তান আমলে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ এবং স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও অনেকবার খুলনায় গেছেন বঙ্গবন্ধু।
পারিবারিকভাবেও খুলনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তার ছোট ভাই শেখ আবু নাসের ব্যবসা সূত্রে খুলনায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন।
বিভিন্ন সময় বিশেষ করে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খুলনায় গেলে সার্কিট হাউজে থাকতেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর সেই স্মৃতি রক্ষায় পুরাতন সার্কিট হাউজে ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর’ করেছে জেলা প্রশাসন।
সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক হেলাল হোসেনের উদ্যোগে ২৬ জুন এ স্মৃতি জাদুঘর উদ্বোধন করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন।
সার্কিট হাউজের দক্ষিণ পাশে দুটি কক্ষ নিয়ে প্রাথমিকভাবে এ জাদুঘর চালু করা হয়েছে। বারান্দায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত দুটি স্থির চিত্র এবং জাদুঘর স্থাপনের ভূমিকার কথা টাঙানো হয়েছে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে জাদুঘর সমৃদ্ধ করার কাজ অবশ্য খুব একটা এগোয়নি বলে জানিয়েছেন প্রস্তাবনা কমিটির সদস্যরা। তারা জানান, দ্রুতই এটি পূর্ণাঙ্গ জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হবে।
যাদুঘরের প্রস্তাবনা কমিটির সদস্য স্বপন গুহ বলেন, ‘জাদুঘরটি নিয়ে বড় ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত দুটি ঘরের একটিতে ডিজিটাল ডকুমেন্টারি দেখানো হবে। আরেকটিতে তার স্মৃতিজড়িত আসবাবপত্র রাখা হবে।
‘দুটি ঘর ও বারান্দার দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর পারিবারিক, রাজনৈতিক, দেশ-বিদেশের বিশিষ্টজনের সঙ্গে সাক্ষাতের এবং তার ঐতিহাসিক ভাষণের ছবি টাঙিয়ে রাখা হবে। এ ছাড়া পাশের অন্য দুটি রুম অফিস ও আর্কাইভ হিসেবে ব্যবহৃত হবে। আর্কাইভে উপহার ও বই সংরক্ষণ করা হবে। এভাবে সংগ্রহশালা বাড়ানো হবে।’
খুলনা জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ইকবাল হোসেন বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে খুলনায় বঙ্গবন্ধুর সম্পৃক্ততা ও তার আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতে তার স্মৃতিজড়িত খুলনা সার্কিট হাউজে জাদুঘরটি করা হয়েছে।’