বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাচ্চা হাতিটি এখন খোশ মেজাজে

  •    
  • ২৭ জুলাই, ২০২১ ১৮:৩৪

অন্তত চার বছর বয়স পর্যন্ত হাতির বাচ্চাটিকে সাফারি পার্ক হাসপাতালের বিশেষ ওয়ার্ডে রাখা হবে। এখন বাচ্চা হাতিকে খাবার হিসেবে দুই ঘণ্টা পর পর দুই লিটার করে দুধ দিতে হয়। তাকে ল্যাকটোজেন ওয়ান খাওয়ানো হচ্ছে।

টেকনাফের বনাঞ্চল থেকে পথ হারিয়ে লোকালয়ে এসেছিল বাচ্চা হাতিটি। তখন তার বয়স ছিল মাত্র তিন মাস। পরে আশ্রয় পেয়েছে চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। কিন্তু মা ছাড়া হাতির বাচ্চাটি শুরুতে খেতে চাইতো না, কান্নাকাটি করত।

চার মাস পরই বিপরীত চিত্র, হাতির বাচ্চাটি এখন রয়েছে বেশ খোশ মেজাজে। বেশিরভাগ সময় তার কাটে খেলাধুলা করে।

সাফারি পার্কে আইসোলেশনে থাকা হাতির বাচ্চাটির বয়স এখন সাত মাস। পার্কের পরিবেশে নিজেকে বেশ মানিয়ে নিয়েছে শিশু হাতিটি। শুরু থেকেই তাকে দেখভাল করার কাজে যুক্ত আছেন বীর সেন চাকমা।

নিউজবাংলাকে বীর সেন বলেন, ‘পার্কে আনার পর শাবকটি কয়েকদিন বেশ কান্নাকাটি করেছে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে মানিয়ে নিয়েছে। এখন হাতিটি আমাকে না দেখলেই অস্থির হয়ে ওঠে। অন্য কেউ খাবার দিলে খেতে চায় না।’

সাফারি পার্কের কর্মী বীর সেন নিজেও বেশ আনন্দে আছেন বাচ্চা হাতির সঙ্গে খেলাধুলা করে। অনেকটাই বন্ধুর মতো সম্পর্ক তাদের।

সাফারি পার্ক হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, অন্তত চার বছর বয়স পর্যন্ত হাতির বাচ্চাটিকে সাফারি পার্ক হাসপাতালের বিশেষ ওয়ার্ডে রাখা হবে। এখন বাচ্চা হাতিকে খাবার হিসেবে দুই ঘণ্টা পর পর দুই লিটার করে দুধ দিতে হয়। তাকে গুড়া দুধ ল্যাকটোজেন ওয়ান খাওয়ানো হচ্ছে।

অল্প বয়সে মাকে হারালেও হাতির বাচ্চাটি পার্কে পৌঁছে সেবাকর্মীদের অনেক আদর পেয়েছে। সবাই তাকে যত্ন করতে চায়। হাসপাতালে চিকিৎসার পর হাতির বাচ্চাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে, এরপর তাকে পার্কের অন্য হাতিদের সঙ্গে ছেড়ে দেয়া হবে। হাতির শাবকটি এখন পার্কের কোয়ারেন্টাইন সেলে আইসোলেশনে রয়েছে।

সাফারি পার্কের তত্ত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘মা ছাড়াও শাবকটি সবল ও সুস্থ আছে। পার্কে আনার পর বেশ কিছুদিন খাবার খেতে চায়নি, শুধু কান্নাকাটি করেছে। আস্তে আস্তে সে খাবার খাওয়া শুরু করে। তাকে নিয়মিত দেখাশোনার জন্য নিয়োজিত আছেন আলাদা সেবাকর্মী। হাতির শাবকটিকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এতো ছোট হাতির বাচ্চাকে মা ছাড়া বাঁচানো খুবই কঠিন। কিন্তু শাবকটির শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটেছে দ্রুত। বাচ্চাটি এখন প্রায় পুরোপুরি সুস্থ। শাবকটি পার্ক হাসপাতালে‌ থাকবে আরও ৪ বছর। পরে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন পড়বে। পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণ দেয়া হলে তাকে পার্কের অন্য হাতিদের পালে ছেড়ে দেওয়া হবে।’

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির জানান, হাতির পাল থেকে আলাদা হয়ে শাবকটি পথ ভুল করে লোকালয়ে চলে এসেছিল। পরে বনের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করেও মা হাতিটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাই বাচ্চা হাতিকে সাফারি পার্কে রাখা হয়েছে।

টেকনাফের শাপলাপুর বনাঞ্চল থেকে গত ১০ মার্চ লোকালয়ে চলে আসে বাচ্চা হাতিটি। পরে স্থানীয় লোকজন বনবিভাগে খবর দেয়। হাতির শাবককে উদ্ধার করে নেয়া হয় চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। সেখানেই তার চিকিৎসা ও দেখভাল চলছে।

খাবারের খোঁজে উখিয়া-টেকনাফসহ বিভিন্ন স্থানে লোকালয়ে বন্যহাতি ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। সর্বশেষ সোমবার রাত পৌনে ১১টার দিকে টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যাংপাড়ায় বনবিভাগের পাশে প্রধান সড়কে দেখা যায় একটি বন্যহাতি।

সড়কের পাশে কয়েকটি গাছ ভেঙে ফেলে বন্য হাতিটি। তখন কক্সবাজার-টেকনাফ প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাত ১২টা পর্যন্ত হাতিটি সেখানেই অবস্থান করে। পরে বনের দিকে চলে যায়।

এ বিভাগের আরো খবর