রাতের আঁধারে গোয়ালঘর থেকে গরু চুরি করে নিয়ে পা ও মাথা কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
গরুর মালিক শাহজাহান মিয়ার অভিযোগ, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটেছে সোমবার।
ইউনিয়নের কুমিরমারা থেকে গরুটি উদ্ধার করে বরগুনা সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
রাত ১০টার দিকে গরুর মালিক শাহজাহান মিয়া সাতজনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় মামলা করেন।
ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার দুপুরে গরুর মালিক শাহজাহান মিয়ার কাছে তা হস্তান্তর করা হয়।
মালিকের অভিযোগ, স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে দ্বন্দ্বের জেরে ইউপি সদস্য প্রার্থী ও তার লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে।শাহজাহান জানান, তিনি ৯টি গাই গরু ও একটি ষাঁড় লালন-পালন করেন। রোববার তিনি গরুগুলো গোয়ালঘরে বেঁধে রেখে বরগুনার পাথরঘাটায় ছেলের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। রাতে গোয়ালঘর থেকে ষাঁড়টি নদীর পাড়ে নিয়ে পেছনের দুটি ও সামনের একটি পা ও মাথা কেটে ফেলে রাখা হয়।
সোমবার বিকেলে স্থানীয়রা গরুটি এ অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাকে খবর দেন।
শাহজাহান অভিযোগ করে বলেন, ইউপি নির্বাচনে স্থানীয় ইউপি সদস্য প্রার্থী শহীদুল ইসলামের (শহীদ মেম্বার) লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে।শাহজাহান মিয়ার করা মামলার আসামিরা হলেন নলটোনা ইউনিয়নের কুমিরমারা এলাকার শুক্কুর আলী, আমীর আলী, ইয়াকুব, রাসেল, ফয়সাল ও খোকন মিয়া।
শাহজাহানের স্ত্রী লাইলী বেগম সোমবার স্থানীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরে মৃত গরুটির পাশে বসে রাত কাটিয়েছেন।
লাইলী বলেন, ‘কোরবানিতে মোর গরুডা এক লাখ ২০ হাজার টাহা দাম কইছিল, সাধের গরু হেইতে বেচিনায়। বেয়াই বাড়ি বেড়াইতে গেছি হেউ সুজুগে মোর গরুডারে ওরা রাইতে চুরি হইররা নিয়া তিনডা ঠ্যাং আর কল্লা কাইট্টা লইয়া গ্যাছে।’
লাইলী বলেন, ‘শহীদ মেম্বারের সমর্থন না করায় ইলেকশনের পর হইতেই অরা মোগো ক্ষেতি হরবার হুমকি দিছিল।’ওই এলাকার ইউপি সদস্য তালুকদার মাসউদ বলেন, ‘সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে শাহজাহান আমার কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলাম পরাজিত হওয়ার পর আমার কর্মীদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন।
‘২৩ জুন আমার ওপর হামলা করে কুপিয়ে জখম করেছিল প্রতিপক্ষ ইউপি সদস্য প্রার্থী শহীদ। এরই ধারাবাহিকতায় আমার কর্মীর গরু চুরি করে পা, মাথা কেটে হত্যা করেছে শহীদ।’অভিযোগ সম্পর্কে জানতে শহীদুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘গরুটি উদ্ধার করে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে গরুর মালিক শাহজাহান মিয়া সাতজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’