দুই সপ্তাহ ধরে তীব্র দাবদাহ ও ভ্যাপসা গরমে পঞ্চগড়ের জনজীবন বিপর্যস্ত প্রায়। শ্রাবণে শুরু থেকে বৃষ্টি নেই এ জেলায়।
আবহাওয়ার এই বৈপরীত্যে বয়স্ক ও শিশুদের দুর্ভোগ বেশি। তারা ভুগছে জ্বর-সর্দি-কাশিতে। করোনার উপসর্গের সঙ্গে পরিবর্তিত আবহাওয়ার কারণে হওয়া রোগের উপসর্গের মিল থাকায় আতঙ্কিতও হচ্ছেন অনেকে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে গত দুই সপ্তাহে জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হয়ে ৪ শতাধিক শিশু ও বয়স্ক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানান হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সিরাজউদ্দোলা পলিন।
চিকিৎসার জন্য অনেকে পার্শ্ববর্তী ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছেন। কঠোর লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তারা পড়েছেন আরও বিপাকে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘টানা বৃষ্টির পরে হঠাৎ করে প্রচণ্ড গরমের কারণে শিশুদের জ্বর, সর্দিসহ বিভিন্ন রোগ হচ্ছে। প্রকৃতির অসামঞ্জস্যতার কারণে এ সমস্যা।
‘আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে এই প্রকোপ কমে আসবে। ওষুধের চেয়ে তাদের নিবিড় যত্নই এখন বেশি প্রয়োজন।’
সদর উপজেলার মাগুরা প্রধানপাড়ার সামসুদ্দিন জানান, গরমে তার চার বছরের শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুই দিনে শিশুর কোনো উন্নতি না হলে ঠাকুরগাঁয়ের ডাক্তার শাহনেওয়াজের কাছ থেকে চিকিৎসা নেয়া হয়। বর্তমানে শিশুটি ভালো আছে।
শহরের কায়েতপাড়া এলাকার আব্দুর রহিম জানান, তীব্র গরমে তার দেড় বছরের ছেলে জ্বরে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চার দিন পর এখন সে সুস্থ হয়। লকডাউনে কোনো কাজ না থাকায় খাবার ও চিকিৎসার খরচ বহন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, ভৌগোলিক কারণে বর্ষার শেষ ভাগে এই জেলায় বৃষ্টিপাত বেড়ে যায়। মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে এখানে তেমন বৃষ্টি হয় না। সাগরে নিম্নচাপের কারণে দুই-এক দিনের মধ্যে এই অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন ফজলুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে জেলায় করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগ কঠিন সময় পার করছে। তার পরেও অনান্য সেবা প্রদানে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।’