বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এনজিওর মামলায় থানায় মা, বাড়িতে কাঁদছে দুধের শিশু

  • ইফতেখার রায়হান, গাজীপুর    
  • ২৬ জুলাই, ২০২১ ২৩:২৫

শাহনাজের স্বামী নুরুল আমীন বলেন, ‘সমস্যা হয়েছে আমার ছয় মাসের শিশু ফাতেমার জন্য। সে এখনও তার মায়ের দুধ ছাড়া কিছুই খায় না। বিকেল থেকেই তার মায়ের জন্য কান্নাকাটি করছে।করোনার মহামারির সময় এমন অমানবিকতায় পড়ব সেটি ভাবতেই পারছি না।’

স্বামীর কাপড়ের দোকানে বিনিয়োগের জন্য এনজিও থেকে ঋণ করেছিলেন গাজীপুরের শ্রীপুরের শাহনাজ পারভীন। ঋণের সব টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন স্বামীর ব্যবসায়।

প্রতিমাসে সাড়ে ৯ হাজার টাকা করে কিস্তিও শোধ করছিলেন তিনি। তবে নানা ঝামেলায় একবার দুটি কিস্তি দিতে ব্যর্থ হন। পরে দুই মাস পরই ওই ঋণ শোধ করেন তিনি।

২০১৭ সালে নেয়া ওই ঋণ পরিশোধের পরও ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএস) নামের এনজিওর মামলায় শাহনাজকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার বিকেলে তার ছয় মাসের দুধের শিশুকে রেখে পরোয়ানা দেখিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে শ্রীপুর থানায় আনে পুলিশ। এরপর থেকেই মায়ের জন্য কাঁদছে শিশুটি।

শাহনাজের স্বামী বারতোপা বাজারের কাপড়ের দোকানি নুরুল আমীন বলেন, ‘আমরা ঋণ নেয়ার পরে দুটি কিস্তি শোধ করতে কিছুটা সময় লাগে। দুই মাস পরই ঋণের টাকা শোধ করি। এসময় এনজিও আমাদের ঋণ পরিশোধের প্রত্যয়নও দেয়।’

তিনি বলেন, ‘এরপরেও তারা আমার স্ত্রীর নামে মামলা করে। এ মামলার বিষয়ে আমরা কেউ কিছু জানতাম না। হঠাৎ করে পুলিশ গিয়ে আমার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে।’

নুরুল আমীন বলেন, ‘সমস্যা হয়েছে আমার ছয় মাসের শিশু ফাতেমার জন্য। সে এখনও তার মায়ের দুধ ছাড়া কিছুই খায় না। বিকেল থেকেই তার মায়ের জন্য কান্নাকাটি করছে। করোনার মহামারির সময় এমন অমানবিকতায় পড়ব সেটি ভাবতেই পারছি না।’

শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘এনজিওর মামলায় আদালতের পরোয়ানা মূলে ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগামীকাল তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’

এ বিষয়ে টিএমএসএসের শ্রীপুর-১ শাখার ব্যবস্থাপক আব্দুল আলীম বলেন, ‘শাহনাজ পারভীন নামে বর্তমানে আমাদের কোনো সদস্য নেই, তবে আগে ছিল। তখন আমি এ শাখার ব্যবস্থাপক ছিলাম না। তার কাছে আমাদের কোনো দেনাপাওনা নেই।’

শাহনাজের বিরুদ্ধে কেন মামলা হলো সেটি জানেন না এই কর্মকর্তা। এর আগে যিনি দায়িত্বে ছিলেন বিষয়টি তার জানার কথা বলে মন্তব্য করেন তিনি।

টিএমএসএসের গাজীপুর আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক আতাউর রহমান জানান, মামলা ও শাহনাজকে আটকের বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। তবে জরুরিভাবে স্থানীয় ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিবেন তিনি।

এ বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘এনজিওর ঋনের টাকা পরিশোধের পরও মামলা ও শিশু রেখে একজন নারীকে আটক সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিব।’

এ বিভাগের আরো খবর