বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মধুমতীর ভাঙন বদলে দিয়েছে ইউনিয়নের মানচিত্র

  •    
  • ২৬ জুলাই, ২০২১ ২০:৫৫

‘আমার ইউনিয়নের তিন দিকেই মধুমতী নদী। ইছাখালী, ডুবসীসহ বিভিন্ন গ্রামের বাড়িঘর, ফসলি জমি প্রতিবছরই মধুমতীর ভাঙনের কবলে পড়ছে।’

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের তিন দিকেই মধুমতী নদী। প্রায় ৫০ বছর ধরে নদীভাঙনে এ ইউনিয়নের অনেক গ্রামের অর্ধেক চলে গেছে নদীগর্ভে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালালেও কোনো ফল হয়নি। এলাকাবাসীর দাবি, ভাঙনকবলিত এলাকায় স্থায়ী নদীশাসনের ব্যবস্থা করা।

তারা জানান, প্রতিবছর নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে এ ইউনিয়নের শত শত একর ফসলি জমি। নিঃস্ব হয়েছে অনেক পরিবার। মধুমতীর ভাঙনে গত কয়েক বছরে এমন অন্তত ৬০০ পরিবার তাদের বসতঘর সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।

অনেকেই সহায় সম্বল হারিয়ে অন্য এলাকায় বসবাস করছেন। অনেক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে নদীর পশ্চিমপাড়ে চর ইছাখালী গ্রামে, যা এখন নড়াইল জেলার অংশ।

ইছাখালী গ্রামের ৭৫ বছরের বৃদ্ধ নফের আলি মোল্যা বলেন, ‘পাঁচ বিঘা জমি গাঙ্গে চইল্লা গেছে। নদীতে এন্নে বাড়িও চইল্লা যাবে। এহন সরকার যুদি বাইন্দা দেয়, তইলে থাকতি পারব। আর না হলি আমাগের থায়ার কোনো কায়দা নাই।

একই গ্রামের বীর মুক্তিযাদ্ধা ইউসুফ আলি বলেন, ‘নদী যদি না বান্দে, তাইলে এহানে থায়ার কোনো কায়দা নাই। নিঃস্ব হইয়া গেছি। বিলীন হইয়া গেছি।

‘এহন সরকার কয়ডা ভাতার টাহা দেয়, তাই দিয়ে খাইয়া বাঁইচা আছি। আর তো কিছু নাই। জমি নদীর মধ্যে যাওয়ার পর আর কি কিছু থায়ে?’

গ্রামের যুবক ঈমান আলি বলেন, ‘গত ২৫-৩০ বছর ধরে নাকি এভাবে নদী ভাঙছে। আমার বাবার কাছ থেকে জেনেছি, আমাদের বাড়ি পাঁচবার সরিয়ে নিয়ে নতুন করে বানাতে হয়েছে।

‘দাদাদের আমল থেকেই এ এলাকার নদী ভাঙছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি।’

সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুপারুল আলম বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের তিন দিকেই মধুমতী নদী। ইছাখালী, ডুবসীসহ বিভিন্ন গ্রামের বাড়িঘর, ফসলি জমি প্রতিবছরই মধুমতীর ভাঙনের কবলে পড়ছে।’

ভাঙনপ্রবণ এলাকায় স্থায়ী নদীশাসনের দাবি জানান তিনি।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশেদুর রহমান বলেন, ‘প্রায় প্রতিবছরই মধুমতী নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। এর একটা স্থায়ী সমাধান দরকার। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে জানিয়েছি। আশা করছি তারা ত্বরিত ব্যবস্থা নেবে।’

গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফায়জুর রহমান জানান, নদীশাসনের জন্য এরই মধ্যে একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। এটি অনুমোদন পেলে তারা টেন্ডার প্রক্রিয়ার দিকে যাবেন।

এ বিভাগের আরো খবর