পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্দে চাঁদা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে বরাদ্দ বাতিলসহ মারধর করা হয়েছে বলে আবাসনের বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
ইন্দুরকানী উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মহসিন হাওলাদারের অনিয়ম, দুর্নীতি ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে ওই আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দারা।
মহসিন ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
সোমবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন হয়। এতে বক্তব্য রাখেন আবাসনের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল মাঝি, রুমা বেগম, ছালেক হাওলাদারসহ অনেকে।
মানববন্ধনে আসাদুল মাঝি বলেন, ‘মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীনদের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্দ দিতে মহসিন মেম্বার আমাদের কাছ থেকে টাকা নিছেন। এ ব্যাপারে আমি ইউএনওর কাছে জানাতে গেলে তিনি মারধর করেন। টাকা না দিলে তিনি আমাদের ঘরে থাকতে দিবেন না। দলিল নিয়া যাবেন বলেও হুমকি দেন।’
মহসিনের অনিয়ম, দুর্নীতি ও নির্যাতনের বিচার চেয়েছেন আবাসনের বাসিন্দারা।
আবাসনের কয়েকটি পরিবার জানায়, ইউপি সদস্য মহসিন ওই আবাসন প্রকল্পের ঘর দেয়ার কথা বলে জনপ্রতি ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করেছেন। টাকা দিতে না পারলে তাদের ঘর দেন নি।
তারা আরও জানান, আগে আছাদুল ওই মেম্বারের কর্মী হিসাবে কাজ করতেন। সম্প্রতি মেম্বারের বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করায় আছাদুলের নামে মামলা দেয়া হয়। রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সামনেই আছাদুলকে মারধর করেন ওই ইউপি সদস্য।
আবাসনের বাসিন্দারা জানান, সোমবার সকালে আবাসনের লোকজন মানববন্ধনে করতে ট্রলারে ইন্দুরকানী রওনা দিলে আব্দুল, শাহীন, হাসানসহ ওই মেম্বারের ২০-২৫ জন সমর্থক আছাদুল ও তার স্ত্রী রুমা বেগমকে মারধর করেন। এ সময় তারা ট্রলারটি আটকে দেন।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন্নেসা খানম জানান, তার সামনে মারামারি হয়নি। তবে উচ্চ স্বরে বাক্য বিনিময় হয়েছে।ইউপি সদস্য মহসিন তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সামনে ইউপি নির্বাচন, তাই কেউ কেউ আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে এমন অভিযোগ করছেন।’ইন্দুরকানী থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, রোববার সেখানে মারামারির খবর পেয়ে দুই বার পুলিশ পাঠানো হয়। সোমবার সেখানে গিয়ে আবাসনের বাসিন্দাদের সঙ্গে মিটিং করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।স্থানীয় লোকজন জানান, ওই আবাসনের সাধারণ সম্পাদক আছাদুল মাঝি আগে মহসিনের লোক ছিলেন। তখন মহসিনের পক্ষ হয়ে আছাদুল আবাসনে ঘর দেয়ার নামে চাঁদাবাজি করতেন। সম্প্রতি আছাদুলের সঙ্গে মহসিনের সম্পর্ক ছিন্ন হয়।