বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। অশুভ শক্তি বিনাশ ও শুভ শক্তি প্রতিষ্ঠায় আগামী ১১ অক্টোবর মর্ত্যে আসবেন দেবী দুর্গা।
শরীয়তপুরের নড়িযায় এবার দুর্গাপূজা উদযাপনে নেয়া হচ্ছে ভিন্ন রকম এক প্রস্তুতি।
উপজেলার পাঁচক দাসপাড়া সার্বজনীন দুর্গামন্দিরে এ বছর দুর্গা প্রতিমার পাশাপাশি বিভিন্ন দেবতার ১০১টি বিগ্রহ স্থাপন করা হবে। পূজার আয়োজন বর্ণিল করতে মন্দির ও প্যান্ডেল সাজানো হবে রাজবাড়ির আদলে।
নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের পাঁচক গ্রাম। ওই গ্রামে স্থানীয় অনেক ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর বসবাস। তারা প্রতিবছর পাঁচক দাসপাড়া সার্বজনীন দুর্গামন্দিরে মহসমারোহে দুর্গাপূজা উদযাপন করেন।
পূজার সময় নড়িয়ার ওই মন্দিরের প্যান্ডেলের প্রবেশদ্বার থেকে মন্দির পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে বসানো হবে বিগ্রহগুলো। এগুলোর মধ্য দিয়ে উপস্থাপন করা হবে দুর্গাপূজার পৌরাণিক বর্ণনা।
মন্দিরের দুর্গা প্রতিমা এবং ১০১টি বিগ্রহ নির্মাণ করবেন গগন শর্মা নামের এক প্রতিমাশিল্পী ও তার দল। গগনের বাড়ি ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে।
তিনি বলেন, ‘দুর্গা প্রতিমা ও বিভিন্ন দেবতার ১০১টি বিগ্রহ নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আমার দলকে। কাঠ ও খড়ের কাঠামো প্রস্তুতি চলছে। জন্মাষ্টমীর পর শুরু হবে প্রতিমায় মাটির প্রলেপের কাজ। এরপর রং-তুলির আচরে দেবীর পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়া হবে। সঙ্গে চলতে থাকবে বাকি বিগ্রহগুলো নির্মাণের কাজ। পুরো কাজের পারিশ্রমিক হিসেবে পূজা কমিটি আমার দলকে ১০ লাখ টাকা দেবে।’
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, আগামী ১১ অক্টোবর ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে পাঁচ দিনের পূজা। জেলায় এ বছর ৯১টি মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
করোনা মহামারির কারণে এ বছর পূজায় লোকসমাগমে বিধিনিষেধ জারির উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ।
পাঁচক দাসপাড়া সার্বজনীন দুর্গামন্দির কমিটি ও নড়িয়া উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি চন্দন ব্যানার্জি বলেন, ‘করোনা মহামারিতে সারা বিশ্ব আজ স্তব্ধ হয়ে আছে। এ বছরে দেবীর কাছে প্রার্থনা থাকবে এ মহামারি থেকে বিশ্ববাসীকে মুক্ত করার। মা যাতে সন্তুষ্ট থাকেন তার জন্য এ বছর আয়োজন করা হবে ব্যাপক। সে অনুযায়ীই প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
দুর্গাপূজার সময় স্বাস্থ্যবিধি পালনের দিকেও সতর্ক নজরদারি থাকবে বলেও জানা তিনি।
পূজা উদযাপন পরিষদের শরীয়তপুর জেলা কমিটির সভাপতি মুকুল চন্দ্র রায় বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে আমরা শঙ্কিত। তবে পূজা তো বন্ধ রাখা সম্ভব না। জেলার প্রতিটি মন্দিরে দুর্গাপূজার আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এ বছর কোনো মন্দিরে পূজা ছাড়া মেলাসহ বাড়তি কোনো আয়োজন না করার অনুরোধ করা হয়েছে। পূজার সময় সবাইকে স্বাস্থবিধি মেনে মণ্ডপে আসতে হবে।’