চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে মাংস রান্না স্বাদ না হওয়ায় আইরিন আক্তার নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
শনিবার রাতে ওই গৃহবধূর মরদেহ আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রেখে পালিয়ে যান স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। তবে বিষয়টি রোববার সন্ধ্যায় জানাজানি হয়।
নিহত ২১ বছর বয়সী আইরিন আক্তার বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের চানপুর এলাকার হারুনুর রশিদের স্ত্রী। আইরিন-হারুনুর রশিদ দম্পতির তিন বছর ও পাঁচ বছর বয়সী দুজন ছেলে সন্তান রয়েছে।
নিহত আইরিনের মা শামসুন্নাহার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওরা বলছে আইরিন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আসলে মাংস স্বাদ না হওয়ার উছিলা দিয়ে আমার মেয়েকে ওরা পিটিয়ে মেরে ফেলছে। ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজন অটোরিকশা কেনার জন্য এক লাখ টাকা যৌতুকও চেয়েছিল, এরজন্যও আমার মেয়েকে মারধর করতো ওরা। এটার সালিশ হয়েছিল এলাকায়।’
তবে পুলিশ বলছে হত্যা নয়, মূলত আত্মহত্যা করেছেন আইরিন।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বামী মারধর করায় অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা চেষ্টা করেন আইরিন। তাকে উদ্ধার করে আনোয়ারা উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কোরবানির ঈদের দিন এক প্রতিবেশী কিছু মাংস দেন তাদের, সেই মাংস রান্না করার পর বাজে স্বাদ হওয়ায় আইরিনকে মারধর করেন স্বামী। প্রতিবেশীকে ডেকেও সেই মাংসের স্বাদ পরীক্ষা করা হয়। এই ঘটনার জেরে রাগ করে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেন তিনি। একই ঘটনার জেরে অভিমানে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
কিন্তু আইরিনের মা তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করার কারণ জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘আমরাও প্রথমে হত্যা ভেবেছিলাম। পরে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারি এটি আসলে আত্মহত্যা। কারণ তার গলায় দাগ ছিল। তা ছাড়া আমরা স্থানীয়দের সাথেও কথা বলেছি।’
বাঁশখালী উপজেলায় ঘটনা হলেও পার্শ্ববর্তী আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেয়ার ব্যাপারে ওসি বলেন, ‘তাদের বসত বাড়ি আনোয়ার উপজেলার সীমান্তবর্তী। তাই ওই হাসপাতাল কাছে হওয়ায় সেখানে নিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’