গাজীপুরের টঙ্গীতে ফ্ল্যাট লিখে না দেয়ায় এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় রোববার দুপুরে পাঁচজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন দত্তপাড়া হাসান লেন এলাকার কামরুল হাসান, একই এলাকার মেহেদী হাসান শাহিন, টঙ্গীর এরশাদ নগর ৩ নম্বর ব্লকের শরিফ রানা বাবু, ৮ নম্বর ব্লকের মাহফুজ আহমেদ ও কুড়িগ্রামের রউমারি থানার কোমরভাঙ্গি গ্রামের আতাউর রহমান।
তাদের মধ্যে শরিফ রানা বাবু চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য ও আতাউর রহমান চাকরিচ্যুত সিভিল এভিয়েশন কর্মকর্তা।
পুলিশ জানায়, প্রায় সাত বছর আগে দত্তপাড়া হাসান লেন এলাকার হানিফ আলী ও মো. কামরুল মিলে হাসান লেন এলাকায় আড়াই কাঠা জমি কেনেন। সেই জমিতে পাঁচ তলা ভবন নির্মাণ করে তারা পাশাপাশি ফ্ল্যাটে থাকতেন। বাকি ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া দিয়ে রেখেছেন।
কয়েক মাস আগে ফ্ল্যাটের ভাড়া তোলা নিয়ে তারা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। হানিফের কাছ থেকে কামরুল ফ্ল্যাটটি লিখে নেয়ারও চেষ্টা করেন। স্থানীয় পর্যায়ে বেশ কয়েকবার বিষয়টি নিয়ে সালিশ হয়।
হানিফ নিউজবাংলাকে জানান, কয়েক মাস আগে টঙ্গী থানা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাত্তার মোল্লা বিষয়টি নিয়ে সালিশ করেন। সালিশে সাত্তার মোল্লা ৭৩ লাখ টাকায় জায়গাসহ ওই ভবনের পাঁচটি ফ্ল্যাট কামরুলের কাছে বিক্রির সিদ্ধান্ত দেয়।
তিনি প্রথমে রাজি না হলেও পরে ভয়ে রাজি হন। সালিশের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে টাকা শোধ করার কথা ছিল। কিন্তু কামরুল বিভিন্ন সময়ে টাকা ছাড়াই বাড়িটি রেজিস্ট্রি করে নিতে চায়। এরপর তিনি বাড়ি বিক্রি করবেন না বলে জানান।
হানিফের অভিযোগ, এর জেরে শনিবার রাত আটটার দিকে কামরুলসহ কয়েকজন তাকে ফোন করে বাসা থেকে ডেকে নেয়। এরপর অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অটোরিকশায় তুলে দত্তপাড়া চানকির টেক এলাকায় নিয়ে গিয়ে মারধর করে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বলে।
সেখান থেকে তারা তাকে ক্যাফে সুলতান নামের একটি রেস্টুরেন্টে নিয়ে যায়। এর মাঝে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তিনি স্ত্রীকে খবর দেন।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় ও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে।
এ বিষয়ে টঙ্গী থানা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাত্তার মোল্লা বলেন, ‘আমি কারো পক্ষ নিয়ে বিচার করি নাই। স্থানীয় মুরব্বিদের নিয়ে তার অংশের দাম ৬৮ লাখ টাকা নির্ধারণ করেছি। পরে হানিফের স্ত্রীর অনুরোধে আরও পাঁচ লাখ টাকা বাড়িয়ে দেই।
‘কিন্তু বাড়িটি রেজিস্ট্রি করার সময় হানিফ টালবাহানা শুরু করেন। তিনি এখন সম্পূর্ণ মিথ্যা বলছেন।’
টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাসুদ জানান, ব্যবসায়ী হানিফ অপহরণের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।