চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে চাঁদার দাবিতে এলাকাছাড়া করা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ করেছিলেন একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। তবে পুলিশের দাবি, তার অভিযোগ সত্য নয়।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে সংবাদ সম্মেলন করে শুক্রবার বিকেলে এ অভিযোগ দেন এরশাদ হোসেন।
এরশাদের বাড়ি উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ওবাইদুল্লানগর এলাকার বার্মাপাড়ায়। সেখানে তার মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকান রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এরশাদ বলেন, ‘এক মাস আগে স্থানীয় ইউপি সদস্যের ছেলে হামিদুর ইসলাম ও তার নেতৃত্বাধীন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের চাওয়া ২০ হাজার টাকা চাঁদা না দেয়ায় আমার ওপর হামলা হয়।
‘বাড়িতে গিয়ে টাকা দাবি করায় আমার স্ত্রী তার স্বর্ণের কানের দুল ও সন্তানকে দেয়া উপহারের আংটি তাদের দিয়ে দেয়। কিন্তু আমি চাঁদা না দেয়ায় আমাকে দোকান থেকে বের করে মোবাইল ও মোবাইল সার্ভিসিংয়ের সরঞ্জাম নিয়ে তালা মেরে দেয়।’
তিনি জানান, সাত দিনের মধ্যে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি।
হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধেও অভিযোগ এনে এরশাদ বলেন, ‘ওসি স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের পক্ষ নিয়ে আমাকে দোকান খুলতে বলেন। প্রাণহানির আশঙ্কার কথা ও তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানালে ওসি ও স্থানীয় এক সাংবাদিক মিলে আমাকে মানসিক অত্যাচার শুরু করেন।’
কথা না শুনলে ওসি তার প্রতিবন্ধী ভাতা বন্ধ এবং ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এরশাদ বলেন, ‘ওই কিশোর গ্যাংয়ের ছেলেরা আমার স্ত্রী ও বোনের ছবি খারাপভাবে এডিট করে অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে। আমি অসহায়। আমার দুই সন্তান। বড় মেয়েটা প্রতিবন্ধী। এই দোকানটাই আমার রোজগারের পথ।’
তবে হামিদুরের সঙ্গে কথা বলার জন্য শনিবার একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
হাটহাজারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কিছুদিন আগে একটা সালিশে লুকিয়ে ভিডিও করার সময় একজন তার ফোন নিয়ে নেয়। সেখান থেকেই সমস্যার শুরু। তবে কোরবানির দিন আমি নিজে গিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের সামনে তার দোকান খুলে দিয়েছি। এক সাংবাদিক সে দিন লাইভও করেছে।’
ওসি আরও বলেন, “এরপর সে আমাকে জানাল, ওদের কাছে ১ হাজার ৭০০ টাকা বকেয়া পাবে। আমি তারে ২ হাজার টাকা দিয়ে আসলাম। তারপর তার ফোন উদ্ধার করে তাকে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েছি। চেয়ারম্যানও দিয়েছেন। সে রিসিভ করেনি।
“আমার এক অফিসার মোবাইল নিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে ফোন দিয়েছে। সে বলেছে, ‘মোবাইল দিয়ে কী করব আমি?’ এরপর সে আর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। নিজের বাড়িতেই সে আছে।”