বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেভাবে চলছে কঠোর শাটডাউন

  •    
  • ২৩ জুলাই, ২০২১ ১৭:৪২

শাটডাউনের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ। সেখানে বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন, থানার পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা একযোগে কাজ করছেন। শুক্রবার সকাল থেকে দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কেবল জরুরি সেবা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খোলা আছে।

রাজধানী থেকে ১৭৫ কিলোমিটার দূরের একটি উপজেলা মদন। নেত্রকোণা জেলার এই উপজেলাতেও সরকারঘোষিত সবচেয়ে কঠোর শাটডাউন চলছে। সেখানে বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন, থানার পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা একযোগে কাজ করছেন।

শাটডাউনের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ।

এবারও সরকার কঠোর লকডাউনের কথা জানালে সেটি পরিচিতি পায় শাটডাউন হিসেবে।

শুক্রবার সকাল থেকে দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কেবল জরুরি সেবা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খোলা আছে।

উপজেলা শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘিরে সাধারণ মানুষের যে জটলা থাকে তা আজকে একেবারেই নেই। তবে ঈদের ছুটিতে যারা গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন, তাদের একটা বড় অংশকে শুক্রবারও হেঁটে, রিকশায় চড়ে, মোটরসাইকেলে এলাকা ছাড়তে দেখা গেছে।

লকডাউনের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন, থানার পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন।

হাওরাঞ্চলের এই উপজেলার আয়তন ২২৫.৮৫ বর্গকিলোমিটার। প্রায় দুই লাখ জনসংখ্যার উপজেলাটিতে লকডাউন বাস্তবায়নে একটি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের এ কাজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সচেতন মানুষদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে ওয়ার্ড কমিটি। তারাও মদন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে লকডাউন বাস্তবায়ন ও মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে।

শুক্রবার সকাল থেকেই মদন উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরে দেখা গেছে, বিনা কারণে সড়কে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা কম। ফার্মেসি, খাদ্যদ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া সবকিছু বন্ধ রয়েছে। তবে ঈদের ছুটি শেষে শহরমুখী মানুষের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। লকডাউনের কারণে সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।

যদিও আজ (শুক্রবার) থেকে কঠোর লকডাউন থাকবে বলে আগেই জানিয়েছিল সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। যানবাহনের স্বল্পতাসহ নানা কারণে অনেকে ঈদের পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা হতে পারেননি।

তারা শুক্রবার রওনা হয়েছেন। কিছু পথ হেঁটে, কিছু পথ রিকশায়, কখনও অটোতে, কখনোবা মোটরসাইকেলে চড়ে তারা ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের দিকে ছুটছেন।

আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব অফিস বন্ধ থাকার কথা থাকলেও অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়নি। যে কারণে ঈদের ছুটিতে বাড়ি এলেও লকডাউনের মধ্যে কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে অনেককে। তেমনি একজন জয়নাল। মদন চৌরাস্তা হয়ে কিশোরগঞ্জ যাওয়ার পথে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান, গতকাল শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন।

খারাপ আবহাওয়ার কারণে গতকাল বের হতে পারেননি। আজকে যাচ্ছেন কিশোরগঞ্জ। মদন থেকে অটোতে করে কেন্দুয়া পর্যন্ত যাবেন, সেখান থেকে কিশোরগঞ্জ।

মদন পুরান থানার মোড়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে শাখাওয়াত হোসেন সেতুর। তার প্রতিষ্ঠানে গ্যাসের সিলিন্ডারসহ বেশ কয়েক ধরনের খাদ্যপণ্য রয়েছে। সে জন্য তার প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে হয়েছে বলে জানান তিনি।

পুরান থানা মোড়েই চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। আটক করা হচ্ছে অটোরিকশা, মোটরসাইকেল। দায়িত্বে থাকা এএসআই সোহরাব বলেন, ‘বিধিনিষেধ না মেনে যারা বের হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

তবে কিছু কিশোর মোটরসাইকেল নিয়ে এদিক-সেদিক ঘুরছে বলে জানান এএসআই সোহরাব। তিনি বলেন, দুজন, তিনজন নিয়ে কিছু কিশোর মোটরসাইকেলে ঘুরছে। তাদের আটকে অভিভাবক ডেকে ছেড়ে দিচ্ছি, আর বলে দিচ্ছি এভাবে যেন আর বের না হয়।

উপজেলার গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন সড়কে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। করোনা প্রতিরোধে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

সেনাবাহিনীর এই দলটির দায়িত্বে আছেন ক্যাপ্টেন সায়মন। গ্রামের মানুষজন আগের তুলনায় অনেক সচেতন হয়েছে বলে জানান তিনি।

তবে ঈদে আসা কর্মজীবীদের অনেকে কর্মস্থলে ফিরতে পারেননি। তাদের একটা অংশ শুক্রবার ফিরছেন। তাদের চলাচল রয়েছে বলে জানান সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, ‘আমরা গ্রামের বাজার ও বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। বাজারগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া অন্য কোনো দোকানপাট খোলা নেই।’

শাটডাউনের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে মদনের ইউএনও বুলবুল আহমেদ।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সকাল থেকেই মাঠে আছি। থানার পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাসদস্যরা আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন। সেনাবাহিনীর টহল টিম গ্রামের বিভিন্ন পথে যাচ্ছে।

‘সকাল থেকে কিছু অটোরিকশার চলাচল ছিল, আমরা সেগুলো জব্দ করেছি। আমাদের এই উপজেলার লকডাউনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। সরকারের যে বিধিনিষেধগুলো আছে, তা সঠিকভাবে পালনের চেষ্টা করছি।’

লকডাউন বাস্তবায়নে পৌরসভা ও ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান ইউএনও বুলবুল আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে আমাদের কমিটি আছে এবং সেখানে জেলা থেকে একজন করে অফিসার ট্যাগ করা আছে। ৮টি ইউনিয়নে ৯টি করে মোট ৭২টি ওয়ার্ড কমিটি আছে। এই কমিটি স্থানীয় বাজার ও এলাকায় সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবে, সেভাবেই নির্দেশনা দেয়া আছে। তাদের কার্যক্রম মনিটরিং করছি আমরা। প্রতিদিনই তাদের কার্যক্রমের ছবি আমাদের দিচ্ছে, আমরা সেগুলো জেলায় পাঠাচ্ছি।’

এ বিভাগের আরো খবর