সারা দেশে ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরুর প্রথম দিনে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার অব্যাহত রয়েছে। মানবিক কারণে ঘাটে উপস্থিত যাত্রী ও যানবাহন পার করা হচ্ছে- এমন দাবি ঘাটসংশ্লিষ্টদের। অভিন্ন চিত্র পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটেও।
শুক্রবার সকাল থেকে শত শত যাত্রী ও যানবাহন পারাপার হতে দেখা যায় এ দুটি নৌরুটের ফেরিগুলোতে। লকডাউন শুরু হলেও ভোরের আগেই তারা ঘাটে উপস্থিত হয়েছেন বলে দাবি করেন।
এদিকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে লঞ্চ বন্ধ থাকলেও লকডাউন বাস্তবায়নে ঘাট ও ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পুলিশের কোনো নজরদারি, চেকপোস্ট লক্ষ্ করা যায়নি। এতে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে শত শত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী যাত্রীরা ঘাটে এসে উপস্থিত হচ্ছেন।
লকডাউনের সময় ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অসহায়ত্বের অজুহাতে পদ্মা নদী পার হচ্ছেন তারা অবাধে। সবাই দাবি করছেন জরুরি প্রয়োজনে তারা বের হয়েছেন। আগে বুঝতে পারেননি লকডাউনে এতটা কড়াকড়ি করা হবে।
তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একাধিক চেকপোস্ট থাকায় যানবাহন চলতে পারছে না। এ পথে সকালে জরুরি সেবার আওতায় কিছু অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করতে দেখা গেছে।
নির্দেশনা অমান্যের বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক ফয়সাল বলেন, 'ঘাটে ৭০-৮০টি ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী গাড়ি আছে। সেগুলো লকডাউন শুরুর আগে ঘাটে পৌঁছেছে। তাই সেসব যানবাহন পারাপার চলছে।'
তিনি জানান, বর্তমানে এ নৌরুটে ১৪টি ফেরি চলাচল করছে। এসব যানবাহন পারাপারের পর ফেরির সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে। তখন ব্যক্তিগত গাড়ি পার হবে না।
বিআইডব্লিউটিএ'র শিমুলিয়া লঞ্চঘাটের কর্মকর্তা মো. সোলেমান বলেন, 'বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর লঞ্চ চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। লকডাউনের নিয়ম অনুযায়ী আজ আর লঞ্চ চলেনি, লঞ্চঘাটে যাত্রীও নেই। ঘাটে যেসব যাত্রী আসছেন তারা ফেরিতে পার হচ্ছেন।'
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন সুমন দেব জানান, মুন্সিগঞ্জে পুলিশের একাধিক চেকপোস্ট রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক এবং শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় সরকারি বিধিনিষেধ মানতে সবাইকে বাধ্য করা হবে।
কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে শুক্রবার সকালে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার হতে দেখা গেছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটেও। আগের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে ফেরি চলাচল। যে সকল যাত্রী ও যানবাহন পদ্মা পার হচ্ছেন তারা সবাই ঈদ শেষে জীবিকার তাগিদে রাজধানী ও কর্মস্থলের দিকে ছুটছেন।
বিআইডব্লিটিসির আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জিল্লুর রহমান জানান, সকাল থেকেই দৌলতদিয়া ঘাট থেকে যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে বেশ কয়েকটি ফেরি পাটুরিয়া আসে। প্রতিটি ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহন ছিল। পাটুরিয়ায় আটকে পড়া যানবাহনগুলোকে মানবিক কারণে পারাপার করা হচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনা অমান্য হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।