বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দাদাবাড়ি ফেরা হলো না ইমরুলের

  •    
  • ২২ জুলাই, ২০২১ ২১:৩৭

চালক মাহবুবের পাশের সিটে বসেছিলেন ইমরুল। সিটবেল্ট পড়া ছিল দুইজনেরই। কিন্তু গাড়ির মাঝের সাড়ির সিটে বসায় লাইজু সিটবেল্ট পরেননি। এ কারণেই গাড়িটি পানিতে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাইজু জানালার গ্লাস ভেঙ্গে বাইরে বের হতে পেরেছেন। মাহাবুব ও ইমরুল বের হতে পারেননি।

ঈদের দ্বিতীয় দিন দাদাবাড়ি বরিশাল থেকে মাকে নিয়ে পটুয়াখালীতে নানাবাড়ি গিয়েছিলেন ইমরুল। বিকেলে আবার ফিরছিলেন বরিশাল। শুক্রবার থেকে শাটডাউন, তাই ছিল ঢাকায় ফেরার তাড়া। তবে পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায় মাইক্রোবাসটি।

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের শরীপবাড়ি এলাকায় একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে গেছে। এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন যাত্রী ইমরুল কবির ও চালক মাহবুব হোসেন। আহত হয়েছেন ইমরুলের মা লাইজু বেগম।

মহাসড়কের মলপিবাড়ি বাসস্ট্যান্ডের কালভার্ট এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ইমরুলের বাড়ি বরিশাল জেলায়। তিনি ঢাকার উত্তরা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

ইমরুলের মামা মো. সাহেদ জানান, তার বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের পূর্ব লোন্দা গ্রামে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে ইমরুল তার বাবা রেজাউল করিম ও মা লাইজুর সঙ্গে মঙ্গলবার তাদের (সাহেদ) বাড়িতে আসেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মাকে নিয়ে মাইক্রেবাসে বরিশালের দিকে রওনা দেন ইমরুল। পথে মলপিবাড়ি বাসস্ট্যান্ডের কালভার্ট এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায় মাইক্রোবাসটি।

তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি পটুয়াখালী হাসপাতালে আসেন।

সাহেদ বলেন, ‘ইমরুল ঢাকার উত্তরা এলাকার ৬ নম্বর সেক্টরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করত। ওরা ওখানেই থাকে। ঈদ শেষে বরিশাল থেকে তাদের ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল।

নিহত চালক মাহবুব হোসেনের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুরে বলে জানান সাহেদ।

প্রত্যক্ষদর্শী সেলিম মাদবর জানান, বিকেলে মাইক্রোবাসটি রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। স্থানীয় লোকজন চালকসহ যাত্রীদের পানি থেকে তুলে পটুয়াখালী হাসপাতালে পাঠান।

তিনি বলেন, ‘আমরা যহন ওনাগো উডাইছি তহনই দ্যাখছি যাত্রীডা মরা। তয় ড্রাইভারের রুহু আছিল। ওইযে মহিলা, উনি গাড়ির মধ্যে জানালার গ্লাস ভাইঙ্গা বাইর অইছে। হেইজন্য উনি বাইছা গেছে।’

আনোয়ার হোসেন নামের আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘চালকসহ ওনাগো দুইজনারে উডাইতে অনেক কষ্ট অইছে। গাড়ির দরজা, গ্লাস ভাইঙ্গা রশি দিয়া বাইন্দা উপরে উডাইছি। কোমরে বেল্ড (সিটবেল্ট) পরা না থাকলে ওনরা বাঁচত মনে অয়।’

আহত লাইজুর বরাত দিয়ে পথচারী নিপা আক্তার জানান, চালক মাহবুবের পাশের সিটে বসেছিলেন ইমরুল। সিটবেল্ট পড়া ছিলে দুইজনই। কিন্তু গাড়ির মাঝের সাড়ির সিটে বসায় লাইজু সিটবেল্ট পরেননি। এ কারণেই গাড়িটি পানিতে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাইজু জানালার গ্লাস ভেঙ্গে বাইরে বের হতে পেরেছেন। তবে মাহাবুব ও ইমরুল অনেক চেষ্টা করেও বের হতে পারেননি।

পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক শিরিন বকুল নিপা জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই চালক মাহবুব ও ইমরুল মারা যায়। আহত লাইজু বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দুটি পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো রাখা হয়েছে।

পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার মোর্শেদ বলেন, ‘পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। মাইক্রোবাসটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

এ বিভাগের আরো খবর