ঈদুল আজহা উপলক্ষে কক্সবাজারের ২৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছেছে আড়াই হাজার কোরবানির পশু।
কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা থেকে পাওয়া ২ হাজার গরু ও ৫০০ ছাগল ইতিমধ্যে ২৪টি ক্যাম্পে বিরতণ করা হয়েছে। বাকি নয়টি ক্যাম্পের জন্য পশু বরাদ্দ পেলে শিগগিরই তাদের দেয়া হবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার বিকেলে নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ শামসুদ্দোজা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের চেষ্টা থাকবে যেন সব ক্যাম্পের বাসিন্দা মাংস পায়। আরও কিছু কোরবানির পশু পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেগুলো পেলে বাকি ক্যাম্পে বিতরণ করা হবে।’
বুধবার ঈদুল আজহা পালন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা নাগরিকরা। তাদের মধ্যে বিত্তবান কয়েকজন নিজেদের টাকায় কোরবানির গরু কিনেছেন।
টেকনাফ শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা কবির আহমদ জানান, এনজিও সংস্থার কাছ থেকে কিছু কোরবানির পশু এখানে বিতরণ করা হয়েছে। ঈদের দিন লোকজনের মাঝে সেগুলোর মাংস বিতরণ করা হবে।
নতুন লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মোস্তফা কামাল জানান, ওই ক্যাম্পে এখনও কোরবানির পশু আসেনি। বাংলাদেশে আসার পরে এই ক্যাম্পের মানুষ কোরবানি পশুর মাংস পায়নি।
টেকনাফ লেদা ক্যাম্প ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম জানান, তার ক্যাম্পে ২ হাজার ৬০০ পরিবারের ১১ হাজার রোহিঙ্গার বসবাস। এই রোহিঙ্গারা গত বছরও কোরবানির ঈদে মাংস পায়নি। এবারও তাদের ক্যাম্পের লোকজন ঈদে কোনো বরাদ্দ পায়নি।
এ বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের সহকারী টেকনাফের নয়াপাড়া ও শালবন রোহিঙ্গা (২৬-২৭) ক্যাম্পের ইনচার্জ মো.খালেদ হোসেন জানান, তার দুটি শিবিরের মধ্যে শালবন ক্যাম্পের জন্য এনজিও সংস্থা বাসমাহ ফাউন্ডেশনসহ কয়েকটি সংস্থার কাছ থেকে ৭৩টি কোরবানির গরু পেয়েছেন।
তিনি বলেন, 'কয়েকটি ক্যাম্পের জন্য এখনও পশু আসেনি। ঈদের আগে পশু না আসলে যেসব ক্যাম্পে কোরবানি দেয়া হবে, সেখান থেকে পশু না পাওয়া ক্যাম্পে মাংস পাঠানো হবে।'
এদিকে, নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করা রোহিঙ্গা নাগরিকদের জন্য ২৩৫টি গরু কোরবানির ব্যবস্থা করেছে সরকার।
বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে সংগ্রহ করা গরুগুলো প্রতিটি ক্লাস্টারে বিতরণ করা হয়েছে। ১০টি পয়েন্টে গরুগুলো কোরবানির পর মাংস পৌঁছে দেয়া হবে সেখানে অবস্থান করা প্রতিটি পরিবারের কাছে।
শরণার্থীবিষয়ক কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘ডাটাবেস তৈরি করেছি। প্রতিটি ক্লাস্টারে কমিটি গঠন করা হয়েছে। পশু কোরবানির পর প্রতিটি রোহিঙ্গা পরিবারের কাছে মাংস পৌঁছে দেয়ার কাজ করবে এ কমিটির সদস্যরা।
‘সাড়ে চার হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পরিবারের কোরবানির জন্য ২২০টি গরুর চাহিদা ছিল। তবে তিনটি এনজিও ২৩৫টি গরু সরবরাহ করেছে ভাসানচরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছে।’