নিজের হাতে ধারাল অস্ত্রের আঘাত করে মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানি নগদ এর অর্থ আত্মসাতের চেষ্টায় ধরা পড়েছেন প্রতিষ্ঠানটির এক ডিস্ট্রিবিউটর সেলস অফিসার।
পুলিশের কাছে অভিযোগ করার আগে প্রায় দুই লাখ টাকা তিনি সরিয়ে ফেলেছিলেন। আরও ছয় লাখ টাকা সরানোর চেষ্টায় ছিলেন।
তবে সিটিটিভির ক্যামেরার বদৌলতে তার এই চেষ্টা ধরে ফেলে পুলিশ।
এই অফিসারের নাম নূরুল্লাহ মোমেন। গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন নগদের বরিশাল শাখার ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম রাজু।
বরিশাল মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, রোববার সন্ধ্যার পরে নগরীর বৈদ্যপাড়া এলাকায় নগদের নূরুল্লাহ মোমেনের ৮ লাখ টাকা ছিনতাই হওয়ার অভিযোগ পান তারা।
অভিযোগকারীর হাতে ধারাল অস্ত্রের আঘাতের জখমও ছিল। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছিল। তবে তদন্তে নেমে নানা ঘটনাপ্রবাহে পুলিশের মনে সন্দেহ জাগে।
ওসি বলেন, ‘তদন্তে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পারি, যে জায়গাটাতে ছিনতাই হয়েছে সেটি খুবই নির্জন। এরপর অভিযোগকারী নূরুল্লাহর কাছে জানতে চাই তিনি কীভাবে কোথায় যাচ্ছিলেন এবং কী হয়েছিল।
‘তিনি (নুরুল্লাহ) ঘটনার বিবরণে জানান, কলেজ রোড , কলেজ অ্যাভিনিউ ও বৈদ্যপাড়া এলাকায় তার কাজের জন্য নগদের প্রায় ২ লাখ টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে তিনি ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন।
‘তবে যে রাস্তা দিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যাওয়ার বিবরণ দেন, সেখানে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সিসি ক্যামেরা ছিল। ঘটনার একঘণ্টা আগে ও পরে আমরা সেই সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে নূরুল্লাহ মোমেনের কোনো উপস্থিতি পাইনি।’
ওসি জানান, এরপর মোমেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এক পর্যায়ে তিনি ৮ লাখ টাকার আত্মসাৎ করার জন্য পুরো ঘটনা সাজানোর কথা স্বীকার করেন।
ঘটনার সময় তার সঙ্গে থাকা ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা সরিয়ে ফেলার পাশাপাশি বাকি টাকা আজ সোমবার আত্মসাৎ করার চিন্তা ছিল বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তাহলে হাতে আঘাত কীভাবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কোনো ছিনতাইকারীর কবলে না পড়লেও ছিনতাইয়ের নাটক সাজানোর জন্য নিজেই নিজের হাতে ধারাল অস্ত্রের আঘাত দেন নূরুল্লাহ মোমেন।’
আত্মসাৎ করা পৌনে দুই লাখ টাকা থেকে কিছু অর্থ উদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, এই পরিকল্পনায় যারা সহায়তা করেছিলেন, তাদেরকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।