মাগুরার শ্রীপুরের বরিশাট গ্রামের চৌধুরীপাড়ায় বাসিন্দাদের শরীরে জ্বালাপোড়া আর জ্ঞান হারানোর মতো ঘটনা শুরু হয়েছে গেল সপ্তাহ থেকে। এরপর দুই শতাধিক মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে গেছে এই অজানা কিছুর কামড়ের আতঙ্ক।
শরীরে লাল দাগ বিশেষ করে পা ও হাতেই বেশি দেখা গেছে ভুক্তভোগীদের। আবার দাগ ছাড়াও কেউ কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন। কেউ কাজ করার সময় আক্রান্ত হচ্ছেন, কেউবা ঘুম থেকে উঠে।
গ্রাম্য চিকিৎসক ও ওঝা মো. আনসার শেখ জানালেন, ১৫ দিনে ১০০ জনের বেশি ভুক্তভোগী এসেছেন তার কাছে।
স্থানীয় পিকুল শেখ বলেন, ‘আমাদের এলাকার প্রায় ১০০ মানুষ এই পোকা না অন্য কিছুর কামড় খেয়েছে। আমি নিজেও গতকাল (রোববার) রাত ২টায় কামড় খেয়েছি। শরীর কাঁপুনিসহ কামড়ানোর স্থানে প্রচুর জ্বালাপোড়া করছিল। তারপর ওঝার কাছে গেলে সে ঝাড়ফুঁক দিয়ে ঠিক করে দেয়। এখন আমি সুস্থ।’
এলাকার মুদি দোকানি ফিরোজ মোল্যা বলেন, ‘আমার পরিবারের চারজনকেই কামড় দিয়েছে অজানা এই পোকা। আমরা খুব ভয়ে আছি। মানুষ বলছে এটা জিন-সাপ। কারণ কিসে কামড় দিচ্ছে, কেউ চোখে দেখিনি। আমিও টের পাইনি।’
ভুক্তভোগীরা বলছেন, তাদের প্রায় প্রতিটি বাড়ির সদস্যরা এই অজানা পোকার কামড় খেয়েছে। শিশু থেকে শুরু করে কোনো বয়সীরাই বাদ যাচ্ছে না।
তারা বলছেন, ওঝার কাছে গেলে তারা ঝাড়ফুঁক করে দিচ্ছেন। তবে কিসে কামড় দিচ্ছে তা তারাও বলতে পারছেন না।
সোমবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মাগুরা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দল। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এবং সেই সাথে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে তারা এই ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানেন।
দলটির প্রধান মাগুরা সিভিল সার্জন শহীদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, ‘আমরা এখানে এসে বুঝতে পারলাম, পুরো বিষয়টি মানুষের মধ্যে এক রকম গুজব ছড়াচ্ছে। হয়তো কোনো পোকার কামড়ে এমনটা শরীরে উপসর্গ দেখা দিয়েছে। সবাই সুস্থও হয়ে গেছে শুনেছি। কোন ধরনের পোকা কামড় দিতে পারে সে বিষয়ে আমরা দেখছি।’
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি। সে জন্য মাগুরা সদর থেকে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম কাজ করছে।’