খুলনায় নবজাতক বিক্রির সময় অননুমোদিত ক্লিনিকের মালিকসহ ১০ জনকে আটক করেছে র্যাব। ক্লিনিকটি সিলগালাও করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের হাতেনাতে আটক করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে র্যাব সদস্যরা।
র্যাব-৬-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রওশনুল ফিরোজ শনিবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সব তথ্য জানান।
তিনি জানান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সুন্দরবন ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে ক্লিনিকটির কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে শিশু কেনা-বেচা ও অবৈধ গর্ভপাতের মতো কর্মকাণ্ড চলে আসছিল।
দুই দিন আগে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের এক প্রসূতি সেখানে ভর্তি হন। জন্ম দেয়া কন্যা সন্তানটি বিক্রির জন্য তিনি ক্লিনিকে ঝাড়ুদার রেহেনা ও তার বোন হোসনেয়ারার সহযোগিতা নেন। এ কাজে তাদের সহযোগিতা করেন ক্লিনিকের মালিক বেবি মণ্ডল ও তার স্বামী চিকিৎসক পরিচয়দানকারী পি কে মণ্ডল।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ১৫ হাজার টাকায় নবজাতকটিকে কিনতে যান সাচিবুনিয়া এলাকার চা বিক্রেতা মজনু ও লাজলি দম্পতি। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব পাশার নেতৃত্বে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে র্যাব। এ সময় খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সাবরিনা রহমান উপস্থিত ছিলেন।
র্যাবের এ কর্মকর্তা আরও জানান, ক্লিনিকটিতে সব ধরনের অস্ত্রপচার করতেন টি কে মণ্ডল। অথচ তার নিজের চিকিৎসাশাস্ত্রের ওপর কোনো সনদ নেই। সেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুদের মজুদও পাওয়া গেছে।
আটক ১০ জন হলেন বাগেরহাটের রামপালের রংধনু আবাসিক এলাকায় ওই ক্লিনিকের মালিক তুষার কান্তি মন্ডল, তার স্ত্রী বেবী চন্দন রায়, মোড়েলগঞ্জের জিওধরা গ্রামের সোহরাব হাওলাদার, খুলনার লবণচরার ফাতেমাবাদ এলাকার মজুনুর রহমান খাঁন লালু, একই এলাকার মহিদুল ইসলাম, হরিণটানা জয়খালী এলাকার শামীম হোসেন, ডুমুরিয়ার গজেন্দ্রপুরের লাজলী খাতুন, একই এলাকার লাকী আক্তার ও লবনচরার ফাতেমাবাদ এলাকার হোসনে আরা বেগম। নবজাতকের মাকেও আটক করা হয়েছে।
আটকদের লবণচরা থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব। তাদের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।