জমি বিক্রি করে মাদক নেয়ার কারণে পারিবারিক কলহের জেরে বাড়ি ছাড়েন নাসির উদ্দিন মণ্ডল। এর আগে তাকে ছেড়ে যান স্ত্রী। এক মেয়ে বিয়ে করে সংসার করছেন। আরেক মেয়ে থাকেন ফুফুর বাসায়।
বগুড়া শহরের পালসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শুক্রবার অচেতন অবস্থায় নাসির উদ্দিনকে দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। অচেতন অবস্থায় কঙ্কালসার নাসিরকে দেখে সবাই মনে করে, হয়তো তিনি বেঁচে নেই। তাকে দাফনের প্রস্তুতি নেয়া হয়। সে সময় এলাকার এক যুবক ৯৯৯-এ কল দিলে আসে পুলিশ। পরীক্ষা করে দেখা যায় নাসির বেঁচে আছেন।
তড়িঘড়ি করে তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। ততক্ষণে বেশ দেরি হয়ে যায়। হাসপাতালে নেয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যেই মারা যান নাসির।
বগুড়ার উপশহর ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) রহিম রানা নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় লোকজনের বরাতে তিনি বলেন, প্রায় বছর পাঁচেক আগে আড়াই বিঘা জমি বিক্রি করেন নাসির। সেই টাকায় মাদক নিতেন। এ নিয়ে দুই মেয়ে ও স্ত্রীর সঙ্গে তার মনোমালিন্য শুরু হয়। এক মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর তাকে ছেড়ে চলে যান স্ত্রী। তখন ছোট মেয়েকে নিজের কাছে নিয়ে রাখেন নাসিরের বোন।
এরপর থেকে নাসিরও বাড়িছাড়া। থাকতেন রাস্তাঘাটে, স্টেশনে। মাদকসেবী হওয়ায় লোকজনও তাকে সহযোগিতা করত না। ধীরে ধীরে অসুস্থ হতে থাকেন তিনি।
স্থানীয় লোকজন বলেন, কয়েক দিন ধরে নাসিরকে পালশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় শুয়ে থাকতে দেখা যায়। শুক্রবার তাকে নিথর দেখে মৃত ভাবেন লোকজন। দাফনের জন্য আনা হয় খাটিয়া।
বগুড়ার উপশহর ফাঁড়ির এসআই রহিম রানা বলেন, ‘ওই ব্যক্তি মাদকসেবী ছিলেন। চুরিও করতেন এলাকায়। এ কারণে এলাকার লোকজন তাকে ভালো চোখে দেখত না। নাসির পরে বাধ্য হয়ে বিভিন্ন জায়গায় থাকতেন। শুক্রবার রাতে তিনি পালসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছিলেন। নড়াচড়া কম দেখে মানুষ ভেবেছিল তিনি মারা গেছেন।
‘পরে ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে গিয়ে দেখি তিনি বেঁচে আছেন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে তিনি রাতেই মারা যান।’