খুলনার এক সময়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী মোস্তফা কামালের দখলে ছিল বিপুল পরিমান সরকারি সম্পত্তি। তিনি এলাকায় মীনা কামাল নামে পরিচিত ছিলেন। ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর তার সেসব সম্পত্তি ভোগদখল করছেন তার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েরা। পরিবারের দখলে থাকা এসব সম্পত্তি উদ্ধারে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
খুলনার রূপসা উপজেলার নৈহাটির ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মুন্সি ২০২০ সালের ৩০ জুলাই রামপালে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুক যুদ্ধে’ নিহত হন।
দুদক জানায়, মীনা কামাল রূপসা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরকারি ও ব্যক্তি জায়গা দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তার মৃত্যুর পরও এসব সম্পত্তি ভোগ দখল করছেন তার স্ত্রী সন্তানেরা। এসব সম্পত্তি উদ্ধারে বিভিন্ন দপ্তরে দুদকের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগে পাঠানো দুদকের পত্রে বলা হয়, মীনা কামালের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন জায়গা দখল করে একাধিক স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী আসমা কামাল, ছেলে জুয়েল হোসেন, মেয়ে ক্যামেলিয়া মোস্তফা জুঁই ও নাজনীন কামাল এসব সম্পত্তি ভোগ দখল করছেন। দখলকৃত এসব সম্পত্তির পরিমাণ কত তা জানতে চাওয়া হয়েছে এ দুই দপ্তরে।দুদকের এমন নির্দেশনার প্রেক্ষিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামানের সই করা দুদকে পাঠানো এক পত্রে উল্লেখ করা হয়, রূপসা ঘাটে স্ট্যাক ইয়ার্ড ও সড়ক নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। মোস্তফা কামাল ওরফে মিনা কামাল অধিগ্রহণকৃত ওই জমির মধ্যে ৫৪ দশমিক ৫৪ শতক জমি জবর দখল করে দুই তলা ভবন ও পুকুর খনন করে মাছ চাষ করেন। যা তার মৃত্যুর পর পরিবারের সদস্যরা ভোগ দখল অব্যহত রেখেছেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সওজের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।মীনা কামালের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্তের বিষয়ে খুলনা জেলা দুদকের পরিচালক নাজমুল ইসলাম জানান, তদন্ত শেষে অনিয়ম দুর্নীতির সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পুলিশের দাবি, তিনি এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা, খুন, গুম, চাঁদাবাজি, দখল, নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২৫টি মামলা ছিল।