কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের দ্বিতীয় দিনে তীব্র যানজটে পড়েছে গাজীপুরের সড়ক ও মহাসড়ক।
রাত বাড়ায় ভারি বৃষ্টিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজটে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রী এবং বিভিন্ন জেলা থেকে কোরবানির পশু নিয়ে আসা বেপারিরা।
এ যানজটের প্রভাব গাজীপুর ছাড়িয়ে ঢাকার বিভিন্ন সড়কে পৌঁছেছে।
যানবাহনের চাপে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের টঙ্গী থেকে পূবাইলের অংশেও তীব্র যানজট রয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাড়ির চাপ ছিল চোখে পড়ার মতো। বেলা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে গাড়ির সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে যানজটের পরিধিও।
দুপুর থেকে বৃষ্টিতে মহাসড়কের টঙ্গী থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত অংশের খানাখন্দ ও গর্তে পানি জমে গেলে যান চলাচলে ধীরগতি দেখা দেয়। এই সড়কে দীর্ঘদিন ধরে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ চলছে। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
যানজটে আটকা পড়ে অনেকেই বাস থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে রওনা দেন। সারাদিনের যানজট সন্ধ্যার পর তীব্র আকার ধারণ করে।
সকাল থেকেই গাজীপুর মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশ সদস্যরা যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এয়ারপোর্ট থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত চলছে বিআরটি প্রকল্পের কাজ। এ কাজ করতে গিয়ে সড়কে তৈরি হয়েছে গর্ত, ফেলে রাখা হয়েছে বালু-মাটিসহ নির্মাণ সামগ্রী। পুরো সড়কই এখন খানাখন্দে ভরা। এসব কারণে সৃষ্টি হয়েছে যানজট।’
যানজটে আটকে থাকা আলম এশিয়া পরিবহনের চালক রহিম বলেন, ‘ময়মনসিংহ থেকে সকাল ১০টায় যাত্রী নিয়ে মহাখালীর উদ্দেশে রওনা হয়েছি। বিকালে টঙ্গী আসছি। এই পথ যাইতে মাত্র ৩ ঘণ্টা সময় লাগে। অথচ যানজটের লেইগা ৭ ঘণ্টার বেশি লাগছে।’
টাঙ্গাইল থেকে টঙ্গীর কোরবানির পশুর হাটে গরু নিয়ে এসেছেন শাহজাহান, সফিকসহ কয়েকজন বেপারি।
শাহজাহান বলেন, ‘চান্দনা চৌরাস্তা থাইকা টঙ্গী আইতেই সময় লাগছে ৩ ঘণ্টা। গরমে গরু অসুস্থ হইয়া পড়ছে।’
গুলিস্থান থেকে শেরপুরের উদ্দেশে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রওনা হয়েছেন শাহনেওয়াজ ফরিদ।
তিনি বলেন, ‘বিকেলে গুলিস্থান থেকে বাসে উঠেছি। টঙ্গী আসতেই সময় লেগেছে তিন ঘন্টার বেশি। বাকি পথ পাড়ি দিতে আরও কতো সময় লাগবে সেই চিন্তায় আছি। বাসের ভেতর গরমে ছোট বাচ্চারা কাহিল হয়ে গেছে।’
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক দক্ষিণ) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বেড়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকা ও গাজীপুরের হাটে কোরবানির পশু নিয়ে আসছেন বেপারিরা। তাই ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে।
‘এ ছাড়াও বৃষ্টির কারণে যানচলাচলে ধীরগতি রয়েছে। তাই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি নগরীর আট থানার পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা যানজট নিরসনের চেষ্টা করছেন।’