লকডাউন শিথিল হওয়ায় ঝিনাইদহে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। জেলা-উপজেলা সদরের পাশাপাশি গ্রামের হাটে দেদার বেচাকেনা চলছে। গত বছরের তুলনায় এবার পশুর দাম বেশি হওয়ায় খুশি খামারি ও ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার বিকেলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম হয়ে ওঠে সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া পশুর হাট। ছোট ও মাঝারি আকারের দেশি জাতের গরুতে ভরে গেছে হাট।
ঈদের আর কয়েক দিন বাকি। গরু নিয়ে হাটে যান ঝিনাইদহসহ পাশের মাগুরা ও যশোর জেলার খামারিরা। গত বছর গরুর দাম পাননি তারা। এবার দেশি জাতের মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা ও দাম বেশি হওয়ায় খামারিরা খুশি।
সদর উপজেলার পাকা গ্রামের রাশেদুল ইসলাম রহমান বলেন, ‘গেলবার দুডো গরু বিক্রি করতি পারিনি। আজ হাটে আনিছি। দাম গেলবারের চায়ে বেশি হচ্ছে। ইবার যে দাম হচ্ছে তাতে মোটামুটি আমরা খুশি।’
একই এলাকার আতিয়ার রহমান বলেন, ‘ছয় মাস ধরে একটা গরু পুষিছি। ১ লাখ ৬ হাজার টাকা বিক্রি করিচি। মোটামুটি দাম ভালোই পাইচি। যে দাম পাইচি তাতে আমরা খুশি।’
কুশাবাড়িয়া গ্রামের খামারি হাবিব মিয়া বলেন, ‘গরুর বাজার ভালো। এখন ছোটততে গরু পালিছি। খাওয়াদাওয়ার অনেক দাম। তারপরও দুর্যোগ করোনা-মরোনা চলছে। সেই হিসাবে গরুর দাম একুন ভালো। আমার গরুর ১ লাখ ২২ হাজার হচ্চে। দাম আরও একটু হলি ছাড়ে দেব।’
এদিকে করোনার সংক্রমণ বাড়লেও হাটগুলোতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। বাজার কমিটি বারবার মাইকিং করলেও তা মানছে না কেউ।
নারিকেলবাড়িয়া পশুর হাট কমিটির সদস্য অলিমপিক মিয়া জানান, শতভাগ মাস্ক ব্যবহার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সরকারি নিদের্শনা মেনে হাট পরিচালনা করা হচ্ছে। বিক্রেতারা যেন প্রতারণার শিকার না হয়, এ জন্য জাল টাকা শনাক্তকরণ বুথ স্থাপন করা হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনন্দ কুমার অধিকারী জানান, এ বছর ঝিনাইদহের ছয় উপজেলায় ছোট-বড় ১৯ হাজার খামারে গরু পালন করা হয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৫৩০টি। জেলার অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে গরু দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হবে।
তিনি জানান, জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে ১১টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।