ঢাকার সাভারে যানজটে আটকা পড়ে ও ‘প্রচণ্ড গরমে’ পাবনা থেকে আনা ২৭ মণের একটি গরু মারা গেছে। অসুস্থ আরও পাঁচটি গরু।
শুক্রবার বেলা ২টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল এলাকায় গরুটি মারা যায়। এ সময় গরুটি দেখতে আশপাশের লোকজন ভিড় করেন।
গরুটির মালিক মুকুল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল ৬টা গরু নিয়া পাবনার সাথিয়া থাইকা ঢাকায় আসতেছিলাম। পথে টাঙ্গাইল থেকে অনেক যানজট শুরু হয়। ৫-৭ ঘণ্টার পথ ১৫ ঘণ্টা লাগছে বাইপাইল আসতে। পরে এখানে আইসা ২৭ মণের একটা গরু গরমে অসুস্থ হইয়া ট্রাকের মধ্যেই মারা যায়। অসুস্থ হইছে আরও পাঁচটা গরু।’
তিনি আরও বলেন, এলাকায় গরুটার দাম উঠছিল সাড়ে ৫ লাখ টাকা। আমি ভালো দামে বেচব বইলা ঢাকায় আনছি। কিন্তু গরুটা মারা যাওয়ায় আমার অনেক লস হইয়া গেল। আমি সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ চাই।’
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ করিম খান বলেন, ‘গতকাল থেকেই সাভারের সড়কে যানজট। তার সাথে তীব্র গরমও ছিল। অনেক জায়গায় গরু অসুস্থ হওয়ারও খবর পেয়েছি। ব্যাপারিরা গরুগুলোকে সুস্থ রাখতে শরীরে পানিও ঢালছে। পশুবাহী গাড়ির ক্ষেত্রে আমাদের আলাদা কেনো নির্দেশনাও নেই। তবে আজ দুপুরের পর থেকে সড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও তীব্রতা কমেছে।’
ঈদে ঘরমুখী মানুষ ও পশুবাহী যানবাহনের চাপে শুক্রবার দেশের বিভিন্ন সড়কে যানজট দেখা যায়। ফেরিঘাটগুলোতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে যাত্রী ও চালকদের।
মৃত পশুটিকে দেখতে ভিড় করেন উৎসুক মানুষকোরবানির ঈদ সামনে রেখে লকডাউন শিথিলের প্রথম দিন থেকেই সাভারের সড়কগুলোতে পশুবাহী গাড়ি ও ঘরমুখী মানুষের চাপ বাড়তে থাকে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই দেখা যায় যানজট।
নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে উপজেলার নবীনগর থেকে বাড়ৈপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার এলাকায় যানজট রয়েছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সাভার থেকে নবীনগর পর্যন্ত আরিচামুখী লেনে ৮ কিলোমিটার, গেন্ডা থেকে হেমায়েতপুর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার এবং টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কে আশুলিয়া বাজার থেকে ধউর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার যানজট দেখা গেছে। এ ছাড়া জিরাবো থেকে বাইপাইল পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
সাভার ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশের ভাষ্য, ঈদে সড়কে ঘরমুখী মানুষ ও পশুবাহী গাড়ির চাপ বেড়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই রাজধানীর প্রবেশমুখ সাভারের সব সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজট নিরসনে হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন।
গরুর ট্রাক নিয়ে আশুলিয়া বাজার থেকে বাইপাইল আসতে ভোররাত থেকে রাস্তায় অপেক্ষা করছেন ট্রাকচালক ফজলুর রহমান।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাইত ৪টা বাজে আশুলিয়া বাজার থাইকা রওনা দিছি। সকাল সাড়ে ৯টা বাজে এহনো বাইপাইল পার হইতে পারি নাই। পুরা রাস্তাই জাম।’